নির্দেশনা

হাইড্রোক্সিজিন হাইড্রোক্লোরাইড নিম্নোক্ত উপসর্গে নির্দেশিত-
  • সাইকোনিউরােসিস সহ দুশ্চিন্তা ও টেনশনের সিম্পটোমেটিক রিলিফের জন্য এবং অর্গানিক ডিজিজ যেখানে দুশ্চিন্তা সুস্পষ্ট তার সাথে এডজাঙ্কট হিসাবে।
  • এলার্জি জনিত চুলকানির চিকিৎসায় যেমন ক্রনিক আর্টিক্যারিয়া এবং এটপিক ও কন্টাক্ট ডার্মাটোসেস, এবং হিস্টামিন-জনিত চুলকানি।
  • সিডেটিভ হিসাবে প্রিমেডিকেশনে এবং জেনারেল এনেস্থেশিয়া পরবর্তীতে ব্যবহৃত হয়।
দুশ্চিন্তা রােধী হিসাবে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে (>৪ মাস) হাইড্রোক্সিজিন এর কার্যকারিতা সিস্টেমােটিক ক্লিনিক্যাল স্টাডির মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়নি। চিকিৎসককে প্রত্যেক রােগীর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় পরপর কার্যকারিতা পুনরায় যাচাই করা উচিৎ।

ফার্মাকোলজি

হাইড্রোক্সিজিন হাইড্রোক্লোরাইড পাইপারাজিন শ্রেণীর একটি এংজিওলাইটিক এন্টিহিস্টামিন যা এইচ১ রিসেপ্টর এন্টাগােনিস্ট। হাইড্রোক্সিজিন কার্টক্যাল ডিপ্রেস্যান্ট নয়, কিন্তু এর ক্রিয়া কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সাব কর্টিক্যাল অঞ্চলের কিছু প্রধান অংশের ক্রিয়া কমানাের কারণে হতে পারে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রাথমিক স্কেলেটাল মাংশপেশীর শিথিলকরণ প্রদর্শিত হয়েছে। ব্রঙ্কোডাইলেটর ক্রিয়া এবং এন্টি-হিস্টামিনিক ও এনালজেসিক ক্রিয়া পরীক্ষামূলকভাবে প্রদর্শিত হয়েছে যা ক্লিনিক্যালি নিশ্চিত করা হয়েছে। এপােমরফিন টেস্ট ও ভেরিলোয়েড টেস্ট উভয়ের দ্বারা এন্টিইমেটিক ক্রিয়া প্রদর্শিত হয়েছে। গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ট্রাক্ট হতে হাইড্রোক্সিজিন দ্রুত শােষিত হয় এবং মুখে সেবনের ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে ক্লিনিক্যাল ক্রিয়া প্রদর্শিত হয়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

দুশ্চিন্তা ও টেনশনের সিম্পটোমেটিক রিলিফের জন্য-
  • প্রাপ্ত বয়স্ক: ৫০-১০০ মি.গ্রা. দৈনিক ৪ বার।
  • শিশু (≥৬ বছর): দৈনিক ৫০-১০০ মি.গ্রা. (৫-১০ চা-চামচ) বিভক্ত মাত্রায়।
  • শিশু (<৬ বছর): দৈনিক ৫০ মি.গ্রা. (৫ চা-চামচ) বিভক্ত মাত্রায়।
এলার্জি জনিত চুলকানি-
  • প্রাপ্ত বয়স্ক: ২৫ মি.গ্রা. দৈনিক ৩ থেকে ৪ বার।
  • শিশু (≥৬ বছর): দৈনিক ৫০-১০০ মি.গ্রা. (৫-১০ চা-চামচ) বিভক্ত মাত্রায়।
  • শিশু (<৬ বছর): দৈনিক ৫০ মি.গ্রা. ৫ চা-চামচ) বিভক্ত মাত্রায়।
সিডেটিভ হিসাবে (প্রিমেডিকেশন এবং জেনারেল এনেস্থেসিয়া পরবর্তীতে)-
  • বার বক্ষ ৫০-১০০ মি.গ্রা.।
  • শিশু: দৈনিক দৈহিক ওজনের ০.৬ মি.গ্রা. মি.গ্রা. হিসাবে।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

হাইড্রোক্সিজিন মেপিরিডিন ও বারবিচুরেট এর ক্ষমতা বাড়াতে পারে, তাই প্রি-এনেস্থেটিক এউজাঙ্কটিভ  থেরাপিতে এদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইনডিভিজ্যুয়াল ভিত্তিতে নির্ধারণ করা উচিত। এট্রোপিন ও অন্যান্য বেলাডােনা এলকালয়েড এই ওষুধ দিয়ে এফেক্টেড হয় না। কোন ভাবেই হাইড্রোক্সিজিন ডিজিটালিসের ক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার মতাে প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং এই দুটো ওযুব একসাথে ব্যবহার করা যেতে পারে। হাইড্রোক্সিজিন ও মনােএমাইন অক্সিডেজের একত্রে ব্যবহার পরিহার করা উচিত।

প্রতিনির্দেশনা

হাইড্রোক্সিজিন অথবা এর অন্য যেকোন উপাদানের প্রতি অতি সংবেদনশীলতা জানা আছে এমন রােগীদের ক্ষেত্রে হাইড্রোক্সিজিন প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

হাইড্রোক্সিজিন হাইড্রোক্লোরাইড ব্যবহারে প্রাপ্ত পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সাধারণত মাইল্ড ও ক্ষণস্থায়ী। যে সকল পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সচরাচর দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে- তন্দ্রাচ্ছন্নতা, মাথা ব্যথা, মানসিক বৈকল্য ও এন্টিমাসকারিনিক ইফেক্ট যেমন- ইউরিনারি রিটেনশন, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, অস্পষ্ট দৃষ্টি ও গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল সমস্যা। এন্টিহিস্টামিনের অন্যান্য দুর্লভ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে হাইপােটেনশন, পাল্পিটেশন, এরিদমিয়া, এক্সট্রাপিরামিডাল সাইড ইফেক্টস, মাথা ঘােরা, কনফিউশন, ডিপ্রেশন, ঘুমের সমস্যা, কাপুনি, খিচুনি, হাইপারসেনসিটিভিটি রিয়্যাকশন (ব্রঙ্কোস্পাজম, এনজিওইডিমা, এনাফাইল্যাক্সিস, র‍্যাশ ও ফটোসেনসিটিভিটি রিয়্যাকশন সহ), ব্লাড ডিসঅর্ডার, লিভার ডিসফাংশন, এবং এংগেল-ক্লোজার গ্লুকোমা।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভবস্থার প্রথম দিকে হাইড্রোক্সিজিন ব্যবহারের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত করার মতো পর্যাপ্ত হিউম্যান ক্লিনিক্যাল ডাটা নেই। এ ধরণের ডাটা না পাওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক গর্ভাবস্থায় হাইড্রোক্সিজিন প্রতিনির্দেশিত। মাতৃদুগ্ধে এই ওষুধ নিঃসৃত হয় কি না জানা নেই। যেহেতু অনেক ওষুধ মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয়, তাই স্তন্যদায়ী মায়েদের ক্ষেত্রে হাইড্রোক্সিজিন দেয়া উচিৎ নয়।

সতর্কতা

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ডিপ্রেস্যান্ট যেমন- নারকোটিক্স‌, নন-নারকোটিক এনালজেসিক এবং বারবিচুরেটস এর সাথে একত্রে ব্যবহারের ক্ষেত্রে হাইড্রোক্সিজিন এর ক্ষমতা বর্ধক ক্রিয়া বিবেচনায় রাখতে হবে। সেজন্য, যখন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ন ডিপ্রেস্যান্ট হাইড্রোক্সিজিন এর সাথে একত্রে দেয়া হয় তখন অন্যান্যের মাত্রা কমানাে উচিৎ। যেহেতু এই ওষুধ ব্যবহারে তন্দ্রাচ্ছন্নতা হতে পারে, রােগীকে এ ব্যাপারে সতর্ক করতে হবে এবং হাইড্রোক্সিজিন সেবনকালীন গাড়ি ও বিপজ্জনক মেশিনারিজ চালানাের ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ডিপ্রেস্যান্ট ওষুধের সাথে একত্রে ব্যবহার না করতে রােগীদের উপদেশ দিতে হবে, এবং এ্যালকোহলের ক্রিয়া বাড়ার ব্যাপারে সতর্ক করতে হবে।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

বৃক্কের অসমকার্যকারিতার রােগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: বৃক্কের অসমকার্যকারিতার ক্ষেত্রে, সাধারণ মাত্রার অর্ধেক মাত্রায় দেয়া উচিৎ।

বয়ােবৃদ্ধদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: বয়ােবৃদ্ধদের ক্ষেত্রে, দীর্ঘায়িত ক্রিয়ার জন্য নির্দেশিত মাত্রার অর্ধেক মাত্রায় শুরু করার উপদেশ দেয়া হয়েছে।

মাত্রাধিক্যতা

হাইড্রোক্সিজিনের মাত্রাধিক্যতার সাধারণ লক্ষণ হলাে অতিরিক্ত ঘুম। অন্যান্য ওষুধের মতাে মাত্রাধিক্যতার চিকিৎসায়, মাথায় রাখতে হবে যে, বিভিন্ন ওষুধ একত্রে নেয়া হয়ে থাকতে পারে।

যদি স্বপ্রনােদিত হয়ে বমি না হয়, তাহলে বমি করাতে হবে। তাৎক্ষণিক গ্যাস্ট্রিক ল্যাভেজও নির্দেশিত। বারংবার রােগীর ভাইটাল লক্ষণসমূহ ও রােগীর নিবিড় পর্যবেক্ষণ মনিটরিং সহ সাধারণ সাপাের্টিভ কেয়ার নির্দেশিত। হাইপােটেনশন, যদিও বিরল, ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইড ও লেভারটেরেনল বা মেটারামিনল দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যেহেতু হাইড্রোক্সিজিন এপিনেফ্রিনের প্রেসর ক্রিয়া কাউন্টার‍্যাক্ট করে তাই এপিনেফ্রিন ব্যবহার করা উচিৎ নয়।

নির্দিষ্ট কোন এন্টিডােট নেই। হাইড্রোক্সিজিনের মাত্রাধিক্যতার চিকিৎসায় হেমােডায়ালাইসিস কোন ভূমিকা রাখতে পারবে কি না এ ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। তদুপরি, যদি অন্যান্য উপাদান যেমন বারবিচুরেটস এর সঙ্গে একত্রে প্রয়ােগ করা হয়ে থাকে তবে হেমোডায়ালাইসিস দেয়া যেতে পারে। সেবন বা প্রয়ােগের পর বডি ফ্লুইড বা টিস্যুতে হাইড্রোক্সিজিনের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য কোন প্র্যাক্টিক্যাল মেথড নেই।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Sedating Anti-histamine

সংরক্ষণ

শীতল ও শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করুন। আলাে থেকে দূরে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।