নির্দেশনা

এই ট্যাবলেট পারকিনসনস রোগের চিকিৎসা এবং লক্ষণ সমূহের উপশমে নির্দেশিত। ইহা পারকিনসনিজমের অনেক লক্ষণসমূহ বিশেষত দৃঢ়তা, ব্রেডিকাইনেসিয়া উপশমে ব্যবহৃত হয়। পারকিনসনস রোগ ও এর লক্ষণ সমূহ থেকে সৃষ্ট কাঁপুনি, গলধঃকরণে সমস্যা, লালার অধিক নিঃসরণ এবং পোসচুরাল ভারসাম্যহীনতায় এই ট্যাবলেট প্রায়শঃই উপকারী। স্ট্রোক এর পরবর্তী ফিজিওথেরাপীর পূর্বে লেভোডোপা প্লাস কারবিডোপা মোটর কার্যকারীতা পুনঃপ্রাপ্তিতে সাহায্য করে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

১০০/১০ মিগ্রা ট্যাবলেটের ব্যবহারের ক্ষেত্রে: প্রারম্ভিক মাত্রা ১টি করে ট্যাবলেট দিনে তিন অথবা চার বার। কারবিডোপা সর্বাপেক্ষা অনুকূল মাত্রায় পৌছার জন্য কিছু রোগীর ক্ষেত্রে মাত্রা বাড়িয়ে টাইট্রেশন করা লাগাতে পারে। সেক্ষেত্রে দৈনিক একটি ট্যাবলেট অথবা একদিন পর পর একটি করে দৈনিক সর্বোচ্চ আটটি ট্যাবলেট (দিনে চারবার বিভক্ত মাত্রায়) পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।

২৫০/২৫ মিগ্রা ট্যাবলেট দ্বারা চিকিৎসাকৃত রোগীদের ক্ষেত্রে: প্রারম্ভিক মাত্রা হচ্ছে অর্ধেক ট্যাবলেট দিনে ১ থেকে ২বার। তদুপরি, এই মাত্রা রোগীদের প্রয়োজনীয় কারবিডোপার পরিমান পর্যাপ্তভাবে পূরণ নাও করতে পারে। প্রয়োজনানুসারে, প্রর্যাপ্ত সাড়া না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন অথবা একদিন পর পর অর্ধেক অতিরিক্ত মাত্রা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। যে সকল রোগীরা ১৫০০ মিগ্রা-এর চেয়ে বেশী লেভোডোপা নিচ্ছে তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে উপদেশিত প্রারম্ভিক মাত্রা হচ্ছে ২৫০/২৫ মিগ্রা দিনে ৩ থেকে ৪ বার।

সংরক্ষণ মাত্রা: কাংক্ষিত চিকিৎসা সাড়া অনুসারে মাত্রা ব্যাক্তিভেদে নির্নয় ও সামঞ্জস্য করা উচিত। যখন বেশী লেভোডোপার প্রয়োজন হয় তখন ২৫০/২৫ মিগ্রা ট্যাবলেট একটি করে দিনে ৩ অথবা ৪ বার করে খাওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে, ২৫০/২৫ মিগ্রা ট্যাবলেট এর মাত্রা অর্ধেক হতে একটি করে একদিন পর পর বাড়িয়ে দৈনিক সর্বোচ্চ আটটি ট্যাবলেট পর্যন্ত করা যেতে পারে। কারবিডোপা দৈনিক ২০০ মিগ্রা এর বেশী মাত্রার কোন অভিজ্ঞতা নেই।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

যে সকল রোগী এন্টিহাইপারটেনসিভ ওষুধ নিচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে কারবিডোপা-লেভোডোপা ব্যবহারে লক্ষণসূচক পোসচুরাল হাইপোটেনশন ঘটতে পারে। সেহেতু কারবিডোপা-লেভোডোপা ব্যবহারে এন্টিহাইপারটেনসিভ ওষুধসমূহের মাত্রা সামঞ্জস্যের প্রয়োজন হতে পারে। কারবিডোপা-লেভোডোপা এবং ট্রাইসাইক্লিক এন্টিডিপ্রেসেন্ট একই সাথে ব্যবহারের ফলে হাইপারটেনশন এবং ডিসকাইনেসিয়াস হবার কিছু বিরল ঘটনা রয়েছে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে যে ফেরাস সালফেট অথবা ফেরাস গ্লুকোনেট এর সাথে কারবিডোপা লেভোডোপা সেবনে কারবিডোপা অথবা লেভোডোপা অথবা উভয়ের বায়োএভেইলিবিলিটি হ্রাস পায় ৷ ডোপামিন-২ রিসেপ্টর এন্টাগনিষ্ট (যেমন ফেনোথায়াজিন, বিউটাইরোফেনোন এবং রিসপেরিডোন) এবং আইসোনিয়াজিড লেভোডোপার চিকিৎসা প্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে পারে। তদুপরি, পারকিনসনস রোগে লেভোডোপার উপকারী কার্যকারিতা ফিনাইটোয়েন এবং পেপাভারিন পাল্টে দিতে পারে। যে সকল রোগী উপরোক্ত ওষুধ সমূহ কারবিডোপা-লেভোডোপার সাথে গ্রহণ করছেন তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা কার্যকারিতা হ্রাস পায় কিনা তা যত্নসহকারে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সেলেজিলিন এবং কারবিডোপা লেভোডোপা একই সাথে ব্যবহারে তীব্র অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন ঘটতে পারে যা শুধু কারবিডোপা কিংবা লেভোডোপা সেবনে ঘটে না।

প্রতিনির্দেশনা

কারবিডোপা-লেভোডোপার প্রতি অতিসংবেদনশীলতা এবং ন্যারো এঙ্গেল গ্লুকোমা আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে কারবিডোপা-লেভোডোপা ট্যাবলেট ব্যবহার নিষিদ্ধ। যেহেতু লেভোডোপা ম্যালিগনেন্ট ম্যালানোমা সক্রিয় করতে পারে সেক্ষেত্রে যদি অজানা ত্বকের ক্ষত এবং ম্যালানোমার ইতিহাস আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে কারবিডোপা-লেভোডোপা ট্যাবলেট ব্যবহার করা উচিত নয়।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

যে সকল রোগী কারবিডোপা-লেভোডোপা নিচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে প্রায়শঃই যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সমূহ দেখা যায়, তার অন্যতম কারণ ডোপামিনের সেন্ট্রাল নিউরোফার্মাকোলজিক ক্রিয়া। এই প্রতিক্রিয়াগুলো ওষুধের মাত্রা হ্রাসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সচরাচর দেখা যায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সমূহের মাঝে করিফর্মসহ ডিসকাইনেসিয়াস, ডিসটনিক ও অন্যান্য অনৈচ্ছিক নড়াচড়া এবং বমি বমি ভাব উল্লেখযোগ্য।
  • সার্বিক: আকস্মিক চেতনা লোপ, বুকে ব্যথা, ক্ষুধামান্দ্য।
  • কার্ডিওভাস্কুলার: অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, অর্থোস্ট্যাটিক ক্রিয়াসমূহ যেমন হাইপোটেনসিভ এপিসোড, হাইপারটেনশন, শিরার প্রদাহ।
  • পরিপাকতন্ত্রীয়: বমি, পরিপাকতন্ত্রীয় রক্তক্ষরণ, ডিওডেনাল আলসার, ডায়রিয়া, ঘোলাটে লালা।
  • হেমাটোলজিক: লিউকোপেনিয়া, হিমোলাইটিক এবং নন-হিমোলাইটিক এনিমিয়া, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, এগ্র্যানুলোসাইটোসিস।
  • অতিসংবেদনশীলতা: অ্যানজিওইডিমা, আর্টিকারিয়া, চুলকানি, হেনক-স্কনলেইন পারপিউরা।
  • স্নায়ুতন্ত্রীয়: মাথাঘোরা, ঝিমুনি, প্যারেসথেসিয়া, ডিলিউশন, দৃষ্টিভ্রম, প্যারানয়েড আইডিয়েশন, আত্মহত্যার প্রবণতা সহ কিংবা ব্যতীত বিষন্নতা, ডিমেনসিয়া, অস্বাভাবিক স্বপ্ন, উত্তেজনা, মানসিক বিভ্রাপ্তি, অতিকামুকতা।
  • শ্বাসতন্ত্রীয়: শ্বাসকষ্ট।
  • ত্বকসংক্রান্ত: টাকপড়া, র‍্যাশ, ঘোলাটে ঘাম।
  • ইউরোজেনিটাল: ঘোলাটে প্রস্রাব।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় কারবিডোপা-লেভোডোপা এর প্রতিক্রিয়া জানা নেই, লেভোডোপা ও কারবিডোপার একই সঙ্গে প্রয়োগে খরগোশের ক্ষেত্রে ভিসেরাল এবং স্কেলেটাল ম্যালফরমেশন ঘটেছে। তদুপরি, সন্তান সম্ভবা মহিলাদের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ক্ষতির চেয়ে সুফলের মাত্রা বেশী হলেই কারবিডোপা- লেভোডোপা ব্যবহার করা যেতে পারে। মাতৃদুগ্ধে কারবিডোপা লেভোডোপা নিঃসৃত হয় কিনা তা জানা নেই। যেহেতু অনেক ওষুধই মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয় এবং নবজাতকের ক্ষেত্রে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে সেহেতু মায়ের ক্ষেত্রে ওষুধের গুরুত্ব বিবেচনা করে মাতৃদুগ্ধ দান অথবা কারবিডোপা-লেভোডোপা সেবন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সতর্কতা

ওষুধ জনিত এক্সট্রাপাইরিমিডাল প্রতিক্রিয়ার চিকিৎসায় কারবিডোপা-লেভোডোপা নির্দেশিত নয়। যে সকল রোগী এরই মধ্যে শুধু লেভোডোপা ব্যবহার করছেন তাদের ক্ষেত্রে কারবিডোপা-লেভোডোপা ট্যাবলেট দেয়া যেতে পারে; তবে সে ক্ষেত্রে কারবিডোপা-লেভোডোপা সেবনের অন্তত ১২ ঘন্টা পূর্বেই লেভোডোপা সেবন বন্ধ করতে হবে। যে সকল রোগীরা পূর্ব থেকেই শুধু লেভোডোপার চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে ডিসকাইনেসিয়াস ঘটতে পারে, কেননা কারবিডোপা লেভোডোপাকে অধিক পরিমানে মস্তিষ্কে পৌঁছতে সাহায্য করে ফলে বেশী ডোপামিন তৈরী হয়। সেক্ষেত্রে মাত্রা কমানোর প্রয়োজন হতে পারে। বিষন্নতার সাথে সাথে আত্নহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় কিনা তা অবলোকন করার জন্য সকল রোগীকে সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যে সকল রোগীর মানসিক রোগের ইতিহাস আছে এবং বর্তমানে বিদ্যমান তাদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কার্ডিওভাস্কুলার অথবা পালমোনারী ডিজিজ, ব্রঙ্কিয়াল এ্যজমা, রেনাল, লিভার অথবা হরমোন সংক্রান্ত রোগ অথবা পেপটিক আলসার ও কনভালশন এর ইতিহাস আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে কারবিডোপা-লেভোডোপা সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে।

যে সকল রোগীদের মায়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন-এর ইতিহাস আছে এবং এ্যাট্রিয়াল, নোডাল অথবা ভেন্ট্রিকিউলার এরিদমিয়া আছে তাদের ক্ষেত্রে ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এই সকল রোগীদের ক্ষেত্রে মাত্রা শুরুতে এবং সামঞ্জস্য করার সময় বিশেষ সতর্কতার সাথে কার্ডিয়াক কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা উচিত। যে সকল রোগীদের ওয়াইড এঙ্গেল গ্লুকোমা আছে তাদেরকে সতর্কতার সাথে চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে, যদি ইন্ট্রাঅকিউলার প্রেসার সুনিয়ন্ত্রিত রাখা যায় এবং চিকিৎসা চলাকালীন ইন্ট্রাঅকিউলার প্রেসার এর পরিবর্তন সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: নবজাতক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে কারবিডোপা লেভোডোপা ব্যবহারে নিরাপত্তা ও কার্যাকরিতা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ইহা ১৮ বছরের নীচে কোন রোগীর ক্ষেত্রে নির্দেশিত নয়।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Antiparkinson drugs

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে, ঠান্ডা ও শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করুন।