লোসুকন এম ট্যাবলেট
Pack Imageনির্দেশনা
- গ্লিমেপিরাইড অথবা মেটফরমিন এর একক চিকিৎসায় রক্তের গ্লুকোজের নিয়ন্ত্রণ পর্যাপ্ত না হলে এমন ক্ষেত্রে।
- গ্লিমেপিরাইড এবং মেটফরমিন এর সমন্বিত চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে।
ফার্মাকোলজি
গ্লিমেপিরাইড একটি সালফোনাইলইউরিয়া ধরনের এন্টিডায়াবেটিক ওষুধ যা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমায়। প্রাথমিকভাবে গ্লিমেপিরাইড অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষগুলোকে উত্তেজিত করে ইনসুলিনের নিঃসরণ বাড়ানোর মাধ্যমে এর কার্যকারীতা প্রদর্শন করে। এটি গ্লুকোজের সমন্বয়ে বিটা কোষের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে ফলে ফিজিওলজিক গ্লুকোজের প্ররোচনায় ইনসুলিন নিঃসৃত হয়। এছাড়া অগ্ন্যাশয়-বহির্ভূত কার্যকারীতা যেমনঃ যকৃতের বেসাল গ্লুকোজ উৎপাদন কমানো এবং ইনসুলিনের প্রতি টিস্যু সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি ও গ্লুকোজ গ্রহণ গ্লিমেপিরাইডের কার্যকারীতার উপর প্রভাব বিস্তার করে। নন ফাস্টিং ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে গ্লিমেপিরাইডের একক মাত্রা ২৪ ঘন্টা ধরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
মেটফরমিন হাইড্রোক্লোরাইড হচ্ছে বাইগুয়ানাইড ধরনের মুখে সেব্য ডায়াবেটিক বিরোধী ঔষধ যা টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়। এটি স্বাভাবিক অবস্থায় ও খাবারের পর রক্তে গ্লুকোজ এর পরিমাণ কমায়। এর কার্যপ্রনালী সালফোনাইলইউরিয়া এর থেকে ভিন্ন এবং এটি হাইপোগ্লাইসেমিয়া করে না। মেটফরমিন হাইড্রোক্লোরাইড যকৃতের গ্লুকোজ এর উৎপাদন কমায়, অন্ত্রের গ্লুকোজ শোষণ কমায় এবং ইনসুলিনের সংবেদনশীলতার উন্নতি করে পেরিফেরাল গ্লুকোজ গ্রহণ ও ব্যবহারকে বৃদ্ধি করে।
ঔষধের মাত্রা
ভুলবশত, যেমন একটি মাত্রা গ্রহণ করতে ভুলে গেলে পরবর্তীতে একটি বৃহত্তর মাত্রা দ্বারা কোনভাবেই তা সমন্বয় করা যাবে না।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উন্নতি হলে, নিজে নিজেই ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পেলে ও চিকিৎসা অগ্রগতি হলে গ্লিমেপিরাইড এর প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পেতে পারে। হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়া ) এড়ানোর জন্য সময়মত অবশ্যই এই ঔষধ এর মাত্রা হ্রাস অথবা এর প্রয়োগ সম্পুর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।
গ্লিমেপিরাইড এবং মেটফরমিন এর দৈনিক সর্বোচ্চ মাত্রা যথাক্রমে ৮ মিগ্রা ও ২০০০ মিগ্রা হওয়া উচিত।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়া) এড়ানোর জন্য এই ঔষধ এর প্রারম্ভিক মাত্রা গ্লিমেপিরাইড এবং মেটফরমিন এর দৈনিক মাত্রাকে অতিক্রম করা উচিত নয়।
যখন ডায়াবেটিসের চিকিৎস অন্যান্য ট্যাবলেট থেকে গ্লিমেপিরাইড ও মেটফরমিন এর সমন্বিত চিকিৎসায় পরিবর্তন করা হবে তখন এই কম্বিনাশনের প্রয়োগ চলমান মাত্রার উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করতে হবে।
সেবনবিধি
ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া
গ্লিমেপিরাইড সাইটোক্রোম পি৪৫০ সি৯ (সিওয়াইপি২সি৯) দ্বারা মেটাবলিজম হয়। এটা তখনই বিবেচনায় আনা উচিৎ যখন গ্লিমেপিরাইড সিওয়াইপি২সি৯ এর ইনডিউসারস (যেমন রিফামাপিসিন) অথবা (সিওয়াইপি২সি৯) ইনহিবিটিরস (যেমন ফ্লোকোনাজল) এর সাথে একত্রে প্রয়োগ করা হয়।
উল্লিখিত ওষুধগুলোর যেকোন একটি সাথে ওষুধটি গ্রহণ করা হলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে এবং এইভাবে কিছু হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঘটনা ঘটতে পারে যেমন: ইনসুলিন এবং অন্য মুখে সেব্য এ্যান্টিডায়াবেটিকস/ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের ওষুধ; এসিই ইনহিবিটরস/প্রতিবন্ধক; এ্যানাবলিক স্টেরয়েডস এবং পুরুষদের জন্য ব্যবহৃত সেক্স হরমোন; ক্লোরামফেনিকলস; কিউমারিন ডেরিভেটিভস, সাইক্লোফসফমাইড; ডাইসোপাইরামাই; ফেনফ্লোরামাইন; ফিনাইরামিডল; ফাইব্রেটস, ফ্লুক্সেটিন; গুয়ানেথিডিন, আইফোসফামাইড; এমএও ইনহিবিটিরস; মাইকোনাজল; ফ্লুকোনাজল; প্যারা-এ্যামিনোস্যালিসাইলিক এসিড; পেনটোক্সিফাইলিন (অধিক মাত্রায় প্যারেনটের্যাল [শিরা বা ধমনীতে] প্রয়োগ); ফিনাইলবিউটাজোন; এ্যাজাপ্রোপাজোন; অক্সিফেন-বিউটাজোন; প্রোবোনেসিড, কুইনোলনস; স্যালিসাইলেটস; সালফিন-পাইরাজোন; ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন; সালফোনামাইড এ্যান্টিবায়োটিকস; টেট্রাসাইক্লিনস; ট্রাইটোকুয়ালিন; ট্রোফোসফামাইড।
রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়ার প্রভাব দুর্বল হতে পারে এবং এইভাবে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে যখন উল্লিখিত ওষুধগুলোর যেকোন একটির সাথে গ্রহণ করা হয়, যেমন; এসিটাজোলামাইড; বারবিচুরেটস; কোর্টিকোস্টেরয়েডস; ডাইএজোক্সাইড; মূত্রবর্ধক; এপিনেফরিন (এ্যাড্রেনালিন) এবং অন্য সিমপ্যাথোমাইমেটিক উপাদানসমূহ; গ্লুকাগন ল্যাকজেটিভস (দীর্ঘায়িত ব্যবহারের পরে); নিকোটিনিক এসিড (অধিক মাত্রায়); ইসট্রোজেনস এবং প্রোজেস্টেরনস; ফেনোথায়াজিনস; ফিনাইটোইন; রিফামপিসিন; থাইরয়েড হরমোনস।
এইচ২ রিসিপ্টর এ্যান্টাগোনিস্টস, বিটা-ব্লকারস, ক্লোনিডিন এবং রিসারপাইন এর সাথে প্রয়োগে রক্তে গ্লুকোজের পরিমান কমে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে অথাব কমে যেতে পারে। সিমফ্রাথোলাইটিক ওষুধ যেমন বিটা-ব্লকারস, ক্লোনিডিন, গোয়ানিথিডিন এবং রিসারপাইন এর প্রভাবে, হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে গ্লুকোজের
পরিমাণ কমে যাওয়া) থেকে এ্যাড্রেনার্জিক এর বিপরীত নিয়ন্ত্রণের উপসর্গ কমতে অথবা অনুপস্থিত হতে পারে।
তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী উভয় ধরনের এ্যালকোহল গ্রহণে গ্লিমেপিরাইড এর রক্তে গ্লুকোজের পরিমান কমানোর কার্যকারিতা অনির্দেশিত ভাবে বেড়ে যেতে অথবা কমে যেতে পারে।
কিউমারিন ডেরিভেটিভস এর প্রভাবে এর কার্যকারিতা বেড়ে যেতে অথবা কমে যেতে পারে।
বাইল এসিড সিকোয়েস্টটেরান্ট: কোলোসভেলাম গ্লিমেপিরাইডকে আবদ্ধ করে এবং পরিপাকতন্ত্রে গ্লিমেপিরাইড এর শোষণ কমায়। তাই কোলেসভেলাম গ্রহণের ৪ ঘন্টা পূর্বে গ্লিমেপিরাইড প্রয়োগ করা উচিত।
মেটফরমিনের জন্য: নিম্নলিখিত উপাদানের সাথে যৌথ ব্যবহার নির্দেশিত নয়-
এ্যালকোহল: এ্যালকোহল এর নেশা ল্যাকটিক এসিডোসিস (শরীরে ল্যাকটেক এর পরিমাণ বৃদ্ধি) এর ঝুঁঁকি বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত, বিশেষ করে অধিক সময় ধরে অনাহারে থাকলে, অপুষ্টি অথবা যকৃত অকার্যকারিতার ক্ষেত্রে। তাই এ্যালকোহল এবং এ্যালকোহল সম্বলিত ওষুধসমূহ গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
আয়োডিনযুক্ত কন্ট্রাস্ট উপাদান প্রয়োগের ক্ষেত্রে ইমেজিং প্রক্রিয়া শুরুর পূর্বে অথবা শুরুর সময় মেটফরমিন প্রত্যাহার করা উচিত এবং পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত ও কিডনীর কার্যকারিতা পুন:বিবেচনার পরে তা স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত পুনরায় আয়োডিনযুক্ত কন্ট্রাস্ট উপাদান প্রয়োগ করা উচিত নয়।
সম্বনিত প্রয়োগে প্রয়োজনীয় পূর্বসতর্কতার ক্ষেত্রে কিছু ওষুধ জাতীয় উপাদান বিপরীতভাবে কিডনীর কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে যা ল্যাকটিক এসিডোসিস (শরীরে ল্যাকটেট এর পরিমাণ বৃদ্ধি) এর ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। এই সমস্ত উপাদানের সাথে সমন্বিতভাবে মেটফরমিন দিয়ে চিকিৎসা শুরু অথবা প্রয়োগকালে কিডনীর কার্যকারিতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। গ্লুকোকর্টিকোস্টেরয়েড, বিটা-২ এ্যাগোনিস্ট এবং মূত্রবর্ধকসমূহের হাইপারগ্লাইসেমিক কার্যকারিতার স্বক্রিয়তা আছে। এজন্য নিয়মিত রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ পর্যবেক্ষণ নির্দেশিত। এসিই ইনহিবিটরস/প্রতিবন্ধক রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমাতে পারে। মেটফরমিন ফেনপ্রকিউমনের রক্তজমাটবাঁধা রোধকারী ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে। তাই রোগীর আইএনআর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। লেভোথাইরক্সিন মেটফরমিনের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমানোর (হাইপোগ্লাইসেমিক) সক্রিয়তা কমাতে পারে। এক্ষেত্রে রক্তে গøুকোজের পরিমাণ পর্যবেক্ষণ নির্দেশিত, বিশেষ করে যখন থাইরয়েড হরমোন দ্বারা চিকিৎসা শুরু করা অথবা বন্ধ করা হয় এবং যদি প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে মেটফরমিনের মাত্রা অবশ্যই সমন্বয় করতে হবে।
অর্গানিক ক্যাটায়নিক ট্রান্সপোর্টারর্স (ওসিটি): মেটফরমিন ওসিটি১ এবং ওসিটি২ উভয় বহনকালী একটি উপাদান। মেটফরমিনের সাথে যৌথভাবে প্রয়োগে-
- ওসিটি১ এর প্রভাব বৃদ্ধিকারী উপাদান (যেমন-রিফামপিসিন) পরিপাকতন্ত্রে মেটফরমিনের শোষন এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে পারে।
- ওসিটি১ ইনহিবিটরস/প্রতিবন্ধক (যেমন-সিমিটিডিন, ডলুটেগ্রাভির, রেনোলাজিন, ট্রাইমিথোপ্রিম, ভেনডেটানিব, ইসাভুকোনাজল) কিডনী দিয়ে মেটফরমিনের নি:সরণ হ্রাস করতে পারে এবং সেজন্য রক্তের প্লাজমায় মেটফরমিনের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।
- ওসিটি১ এবং ওসিটি২ উভয় ইনহিবিটরস/প্রতিবন্ধক (যেমন-ক্রিজোটিনিব, ওলাপারিব) মেটফরমিনের কার্যকারিতা এবং কিডনী দিয়ে মেটফরমিনের নি:সরণ এর পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
প্রতিনির্দেশনা
- যে সকল রোগী গ্লিমেপিরাইড, মেটফরমিন, অন্য সালফোনাইল ইউরিয়া, অন্য সালফোনামাইড সমূহ, অথবা এই ঔষধ এর যেকোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীল।
- গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে
- স্তন্যদানকারী মায়ের ক্ষেত্রে
মেটফরমিনের জন্য-
- মেটফরমিনের এর প্রতি অথবা এর অন্য কোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীল রোগীর ক্ষেত্রে ।
- যে কোনও ধরনের তীব্র মেটাবলিক এসিডোসিস [যেমন-ল্যাকটিক এসিডোসিস, ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস (রক্তে কিটোনবডির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া), ডায়াবেটিক কোমার পূর্বে অচেতনাবস্থা]।
- তীব্র রেনাল ফেইলিওর অথবা কিডনীর অকার্যকারিতার (যেমন পুরুষের ক্ষেত্রে সিরাম ক্রিয়েটিনিন এর পরিমাণ >১৩৫ মাইক্রোমোল/লিটার এবং নারীদের ক্ষেত্রে >১১০ মাইক্রোমোল/লিটার, জিএফআর <৩০ মিলি/মিনিট)
- সঙ্কটজনক অবস্থা যা কিডনীর কার্যকারিতাকে হ্রাস করে যেমন-পানি শূন্যতা, মারাত্মক সংক্রমণ, শিরাপথে আয়োডিনযুক্ত কন্ট্রাস্ট এজেন্টস এর প্রয়োগ ইত্যাদি।
- তীব্র অথবা মরাত্মক রোগ যা টিস্যুর অক্সিজেনের পরিমাণ কমাতে পারে যেমন: হৃদপিন্ডের অথবা শ্বাসনালীর ফেইলিওর, সাম্প্রতিক মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, শক
- যকৃতের অকার্যকারিতা
- মারাত্মক এলকোহলের /মদ্যপানের নেশা, মদ্যাশক্তি
- স্তন্যদানকালে
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
পরিপাক এবং পুষ্টি সংক্রান্ত রোগ
- গ্লিমেপিরাইডের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হ্রাসের কারণে হাইপোগ্লাইসেমিয়া দীর্ঘায়িত হতে পারে।
- একটি মারাত্মক হাইপোগ্লাইসেমিক আক্রমণের ক্লিনিক্যাল প্রতিচ্ছবি একটি স্ট্রোকের মত হতে পারে।
পরিপাকতন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যা-
- মাঝে মাঝে, পরিপাকতন্ত্র সংক্রান্ত উপসর্গ যেমন- বমি বমি ভাব, বমি, পেটের উপরিভাগে চাপ অথবা পেট ভরাভরা মনে হওয়া, পেট ব্যথা এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
- বিচ্ছিন্ন ক্ষেত্রে, যকৃতের প্রদাহ, যকৃতের এনজাইমের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং/অথবা কোলেস্টাসিস (পিওনালীর প্রতিবন্ধকতা জনিত) এবং জন্ডিস, যা প্রাণঘাতী যকৃতের ফেইলিওরের দিকে ধাবিত হতে পারে।
- স্বাদ সম্পর্কে অনুভূতির সমস্যা (পুন:রাবৃত্তির ইতিহাস জানা যায়নি)
ত্বক এবং ত্বকের নিচের কলার সমস্যা: চুল পড়ে যাওয়া (পুন:রাবৃত্তি জানা যায়নি)
সাধারণ সমস্যাসমূহ-
- মাঝে মাঝে, এ্যালার্জিক অথবা সিউডোএ্যালার্জিক (এ্যালার্জির মত) প্রতিক্রিয়া যেমন-চুলকানি, আর্টিকারিয়া অথবা র্যাশ তৈরি হতে পারে। এই সমস্ত প্রতিক্রিয়া মৃদু থেকে মারাত্মক আকারের হতে পারে যা শ্বাসকষ্ট এবং রক্তচাপ হ্রাস সহ কিছু ক্ষেত্রে শক (আকস্কিক অবসাদ) পর্যন্ত করতে পারে।
- রক্তে সোডিয়ামের ঘনত্ব হ্রাস এবং এ্যানার্জিক ভাস্কুলাইটিস (রক্তনালীর প্রদাহ) অথবা ত্বক আলোর প্রতি অতিসংবেদনশীল হতে পারে।
মেটফরমিনের জন্য
- পরিপাকতন্ত্র সংক্রান্ত উপসর্গ যেমন-বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা এবং ক্ষুধামান্দ্য (>১০%) খুবই সাধারণ চিকিৎসার শুরুর দিকে এই সমস্ত উপসর্গ প্রায়শই ঘটে থাকে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনায়াসে সমাধান হয়ে যায়।
- ধাতব স্বাদ (৩%) সাধারণ
- মেটফরমিনের দ্বারা দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা করা রোগীদের মধ্যে ভিটামিন বি১২ এর সিরামের মাত্রা হ্রাস সহ শোষণে হ্রাস দেখা গেছে এবং এটি সাধারণ ক্লিনিকাল তাৎপর্য বিহীন হয়ে প্রদর্শিত হয় (<০.০১%)। রক্তে ভিটামিন বি১২ এর পরিমাণ হ্রাস সহ এর শোষণ কমে যাওয়া যদিও পোষ্ট মার্কেটিং অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতি রয়েছে এমন রোগীর ক্ষেত্রে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হতে পারে (পুন:রাবৃত্তি অজানা নেই)
- ল্যাকটিক এসিডোসিস (শরীরে ল্যাকটেট এর পরিমাণ বৃদ্ধি) (০.০৩ ঘটনা/১০০০ রোগী-বছর) খুব বিরল।
- হেমোলাইটিক এ্যানিমিয়া (রক্তশূন্যতা)- পুন:রাবৃত্তি অজানা
- হাইপোথাইরয়ডিজম (থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ কমে যাওয়া) এর রোগীর থাইরোট্রোপিনের পরিমান হ্রাস পাওয়া (পুন:রাবৃত্তি অজানা)।
- ডায়রিয়ার (পুন:রাবৃত্তি অজানা) কারণে রক্তে ম্যাগনেসিয়ামের পরিমান কমে যাওয়া
- এনকেফ্যালোপ্যাথি (মস্তিস্কের রোগ) (পুন:রাবৃত্তি অজানা)।
- আলোকসংবেদনশীলতা (পুন:রাবৃত্তি অজানা)।
- হেপাটোবিলিয়ারি ডিজঅর্ডার: লিভার ফাংশন টেস্টে অস্বাভাবিকতা এবং মেটেরফরমিন বন্ধ হওয়ার পরে হেপাটাইটিস চলে যেতে দেখা গেছে।
গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে
- গ্লিমেপিরাইডের জন্য: গর্ভাবস্থায় গ্লিমেপিরাইডের প্রয়োগ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় শিশুর ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। সেক্ষেত্রে ঐ ওষুধটির গর্ভাবস্থায় রোগীকে অবশ্যই ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। রোগী গর্ভধারণের পরিকল্পনা করলে তা অবশ্যই চিকিৎসককে জানাতে হবে। এটা নির্দেশিত যে এইসব রোগীকে ঐ ওষুধটির পরিবর্তে ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে।
- মেটফরমিনের জন্য: রোগী গর্ভধারণের পরিকল্পনা করলে এবং গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস এর চিকিৎসা মেটফরমিনের দিয়ে করা উচিত নয় কিন্তু রক্তের গ্লুকোজের পরিমান নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিন প্রয়োগ করা উচিত, যাতে রক্তে গ্লুকোজ স্বাভাবিক মাত্রার কাছাকাছি থাকে এবং রক্তে গ্লুকোজের অস্বাভাবিক মাত্রাজনিত কারণে ভ্রূনের ত্রুটির ঝুঁকি হ্রাস করা যায়।
- গ্লিমেপিরাইডের জন্য: মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে সম্ভাব্য নিঃসরণ এবং শিশুর সম্ভাব্য ক্ষতি প্রতিরোধে, স্তন্যদানকারী মাকে কোনোভাবেই গ্লিমেপিরাইড প্রয়োগ করা যাবে না। যদি প্রয়োজন হয় রোগীকে অবশ্যই ঐ ওষুধটির পরিবর্তে ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে অথবা স্তন্যদান বন্ধ রাখতে হবে।
- মেটফরমিনের জন্য: মেটফরমিন স্তন্যদানকারী ইঁদুরগুলিতে নি:সরিত হয়। একই রকম তথ্য মানুষের মধ্যে উপলব্ধ নয় এবং মায়ের কাছে যৌগটির গুরুত্ব বিবেচনা করে স্তন্যদান বন্ধ করা বা মেটফরমিন বন্ধ করা উচিত কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সতর্কতা
মেটফরমিনের জন্য: হাইপোথাইরয়ডিজম (থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ কমে যাওয়া) রোগীর ক্ষেত্রে নিয়মিত থাইরয়েড-স্টিমুলেটিং হরমোন (টিএসএইচ) এর পরিমাণ পর্যবেক্ষণ নির্দেশিত। মেটফরমিন এর দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা রক্তে ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতির সাথে সংশ্লিষ্ট যার ফলে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে ভিটামিন বি১২ এর পরিমাণ পর্যবেক্ষণ নির্দেশিত।
বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার
বৃক্কের অক্ষমতা: মেটফরমিন যুক্ত ঔষধগুলির সাথে চিকিৎসা শুরু করার আগে এবং পরে জিএফআর এর কমপক্ষে বার্ষিক মূল্যায়ন করা উচিত। রোগীদের ক্ষেত্রে রেনাল অক্ষমতার অগ্রগতির ঝুঁকি থাকলে এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে রেনাল ফাংশন আরও ঘন ঘন মুল্যায়ন করা উচিত, যেমনঃ প্রতি ৩-৬ মাস পর পর। মেটফরমিন এর সার্বাধিক দৈনিক ডোজটি অবশ্য দৈনিক ২-৩টি ডোজে বিভক্ত করা উচিত। রোগীদের ডিএফআর ৬০ এমএল/মিনিট থাকলে ল্যাকটিক অ্যাসিডোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে এমন কারণগুলি মেটফরমিন সূচনা করার আগে পর্যালোচনা করা উচিত। যদি এই ঔষধ এর পর্যাপ্ত শক্তি সম্পন্ন মাত্রা উপস্থিত না থাকে তবে একক উপাদানের মাত্রা পৃথকভাবে ব্যবহার করা উচিত।
জিএফআর ৬০-৮৯ মিলি/মিনিট:
- মেটফরমিন: সর্বাধিক দৈনিক মাত্রা ৩০০০ মিলিগ্রাম। বৃক্কের কার্যকারিতা সম্পর্কিত বিবেচনা করা মাত্রা হ্রাস করা যেতে পারে।
- গ্লিমেপিরাইড: প্রতিদিন সর্বাধিক প্রস্তাবিত ডোজটি ৪ মিলিগ্রাম গ্লিমেপিরাইড হওয়া উচিত।
- মেটফরমিন: সর্বোচ্চ দৈনিক মাত্রা ২০০ মিলিগ্রাম। প্রারম্ভিক মাত্রা সর্বাধিক মাত্রার অর্ধেক হতে হবে।
- মেটফরমিন: সর্বাধিক দৈনিক ডোজ ১০০০ মিলিগ্রাম। প্রারম্ভিক মাত্রা সর্বাধিক মাত্রার অর্ধেক হতে হবে।
- মেটফরমিন: মেটফরমিন নির্দেশিত নয়
- গ্লিমেপিরাইড: ইনসুলিনে পরিবর্তন করা নির্দেশিত তবে বিপাকের সর্বোত্তম নিয়ন্ত্রণ অর্জনের জন্য নয়।