নির্দেশনা

ড্রক্সপেরিনোন মহিলাদের গর্ভনিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ফার্মাকোলজি

ড্রক্সপেরিনোন একটি প্রজেস্টিন হরমোন যা মহিলাদের গর্ভনিরোধক হিসেবে কাজ করে। প্রজেস্টিন সমৃদ্ধ বড়ি ড্রসপেরিনোন ডিম্বস্ফুটন (ওভোলেশন) বন্ধের মাধ্যমে গর্ভনিরোধক হিসেবে কাজ করে। ড্রসপেরিনোন হচ্ছে স্পাইরোনোল্যাক্টন এনালোগ যা মিনারেলোকটিকয়েড জাতীয় কার্যকারীতা প্রদর্শন করে।

ঔষধ সঞ্চারণ বিজ্ঞান: ড্রসপেরিনোন ১টি বড়ি সেবনের ২-৬ ঘন্টার মাঝে, রক্তের প্লাজমা এর সর্বোচ্চ ঘনত্বের উপস্থিতি ২৭ ন্যানোগ্রাম/মি.লি পরিলক্ষিত হয়। টানা ২০ দিন ড্রসপেরিনোন সেবনের রক্তের প্লাজমায় ড্রক্সপেরিনোন এর পরিমান দাড়ায় ৪১ ন্যানোগ্রাম/মি.লি.। খাবারের সাথে ড্রসপেরিনোন গ্রহনে প্লাজমা ঘনত্বের তারতমের কোন সম্পর্ক নেই।

বন্টন: ড্রসপেরিনোন ৯৫%-৯৭% পর্যন্ত রক্তরসের অ্যালুমিনের সাথে সংযোজিত হয় কিন্তু কোন সেক্স হরমোন বাইন্ডিং গ্লোবিউলিন কিংবা কর্টিকোস্টেরয়েড এর সাথে সংযোজিত হয়না। ড্রসপেরিনোন এর ভলিউম অফ ডিস্ট্রিভিউশন আনুমানিক ৪ লি:/কেজি।

বিপাক: বিপাকের পর ড্রসপেরিনোন দুটি অকার্যকর উপাদান ল্যাকটোন রিং এবং ৪.৫ ডাইহাইড্রোড্রসপেরিনন-৩ সালফেটে পরিনত হয়। ডুসপি মূলত যকৃতের CYP3A4 এনজাইম দ্বারা বিপাকে অংশ নেয়।

রেচন: ড্রসপেরিনোন এর অর্ধায় আনুমানিক ৩০ ঘন্টা। রেচন কার্য সম্পন্ন হতে ১০ দিন সময় লাগে এবং মূলত মল দ্বারা রেচন কার্য সম্পন্ন হয় এবং আংশিক পরিমান মূত্র দ্বারা হয়ে থাকে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ড্রসপেরিনোন ট্যাবলেট দিনে ১টি করে সেবন করতে হবে। মাসিকের ১ম দিন থেকে শুরু করে মাসিক চক্রের ২৪ তম দিন পর্যন্ত সক্রিয় সাদা বড়ি সেবন করতে হবে এবং ২৫তম দিন থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত বাকী ৪টি হালকা গোলাপী বর্নের অকার্যকর বড়ি সেবন করতে হবে। ড্রসপেরিনোন ট্যাবলেট প্রতিদিন একই সময়ে সেবন করতে হবে।

ড্রসপেরিনোন ট্যাবলেট শুরুর নিয়ম: ড্রসপেরিনোন সাদা বড়িগুলো হচ্ছে সক্রিয় উপাদান। সেক্সকালঃ (মাসিকের ১ম ২৪দিন)। ড্রসপেরিনোন হালকা গোলাপী বড়িগুলো অকার্যকর (সেবনকালঃ চক্রের ২৫-২৮ দিন)

মাসিকের ১ম দিন:
  • ১টি সাদা বর্নের ট্যাবলেট সেবন করতে হবে।
  • প্রতিদিন একই সময়ে ট্যাবলেট সেবন করা উচিত। চক্রের শেষ ৪দিন হালকা গোলাপী বর্ণের বড়ি সেবন করতে হবে।
  • ২৮ দিন পর নতুন প্যাকেট শুরু করতে হবে।
ড্রসপেরিনোন ট্যাবলেট পরিবর্তনের নিয়ম:
  • অন্য যেকোন গর্ভনিরোধক পদ্ধতি থেকে ড্রসপেরিনোন আসার নিয়ম: ড্রসপেরিনোন সেবন শুরু করতে হবে।
  • সম্মিলিত জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির ক্ষেত্রে: সম্মিলিত জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ির নতুন প্যাকেট শুরুর দিন ড্রসপেরিনোন সেবন শুরু করতে হবে।
  • ট্রান্সডার্মাল প্যাচ: পরের ট্রান্সডার্মাল প্যাচ ব্যবহারের দিন শুরু করতে হবে।
  • ভ্যাজাইনাল রিং: পরবর্তী রিং পরানোর দিন ডরিস শুরু করতে হবে।
  • ইনজেকশন: পরবর্তী ইনজেকশনের দিন শুরু করতে হবে।
  • ইন্ট্রাইউটেরাইন নিরোধক: অপসারনের দিন থেকে।
  • ইমপ্ল্যান্ট: অপসারনের দিন থেকে। 
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

হরমোনঘটিত গর্ভনিরোধকের প্রতি কিছু ঔষধ অথবা ভেষজে প্রভাব থাকায় হরমোনাল পিলের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। এ ধরনের ঔষধের মাঝে আছে ইফাভিরেন্য, ফিনাইটোয়িন, বারবিচুরেটস, কারবামাজেপিন, আইসিওফুলভিন, রিফামপিসিন। এক্ষেত্রে, মহিলার ফোটা ফোটা রক্তপাত হতে পারে। অত্যধিক সেবনে বমি বমি ভাব, বমি এবং যোনিপথে রক্তপাত হতে পারে। এর জন্য কোন প্রতিষেধক নেই এবং উপসর্গ নিরাময়ের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রতিনির্দেশনা

  • কিডনির সমস্যা
  • অ্যাড্রেনাল অপ্রতুলতা
  • সারভাইকাল ক্যান্সার অথবা প্রজেস্টিন সংবেদনশীল ক্যান্সার হবে যার।
  • যকৃতে টিউমার অথবা সমস্যা
  • অজ্ঞাত কারণে যোনিপথে রক্তপাত

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া-
  • হাইপারক্যালেমিয়া
  • যোনিপথে অনিয়মিত রক্তপাত এবং মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে
বিরুপ প্রতিক্রিয়া-
  • ব্রন
  • মেট্রোরেজিয়া
  • মাথা ব্যথা
  • স্তনে ব্যথা
  • ওজন বেড়ে যাওয়া
  • মাসিকের সময় ব্যথা অনুভব করা
  • বমি বমি ভাব
  • যোনিপথে রক্তপাত
  • অনিয়মিত মাসিক

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

এই ঔষধ গর্ভাবস্থায় দেওয়া যাবে না। স্তন্যদায়ীদের এই ঔষধ ব্যবহারে কোন বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

সতর্কতা

হাইপারক্যালেমিয়া: ড্রসলিন ট্যাবলেটে থাকে ড্রসলিন, যা অ্যান্টি- মিনারেলোকটিকায়েড হিসেবে কাজ এবং রক্তে পটাশিয়ামের পরিমান বাড়িয়ে দেয়। যেসব মহিলা শক্তিশালী CYP3A4 ইনহিবিটর নিচ্ছেন যেমন অ্যাজোল অ্যান্টিফাঙ্গাল (কিটোকোনাজল, ইট্রাকোনাজল, ভরিকোনাজল), HIV/HCV প্রোটিয়জ ইনহিবিটর (ইনডিনাভির, বসেপ্রাভির), তাদের ড্রসলিন সকর্তকর্তা সাথে দিতে হবে।

থ্রম্বোএম্বোলিক ডিসঅর্ডার: ড্রসলিন সেবনে মায়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন, সেরেব্রাল থ্রোম্বো এম্বোলিজম অথবা ভেনাস থ্রম্বোএম্বোলিজমের ঝুঁকি কম। তবে ভেনাস থ্রম্বো এম্বোলিজম দেখা দিলে, ড্রসলিন সেবন বন্ধ করতে হবে।

হাড় ক্ষয়: ড্রসলিন সেবনে রক্তে ইন্ট্রাডিয়লের পরিমান কমে যায়, যা হাড় ক্ষয় করতে পারে।

যকৃতে রোগ: জন্ডিস অথবা যকৃতে সমস্যা থাকলে ড্রসলিন সেবন বন্ধ করতে হবে।

ইকটোপিক প্রেগন্যান্সী: ড্রসলিন সেবনে ফেলোপয়ান টিউবে গর্ভধারণের ঝুঁকি থাকে। অনিয়মিত রক্তপাত ও বাধক থাকলে ড্রসলিন ব্যবহারের শুরুর কয়েক মাস মহিলাদের ফোঁটা ফোঁটা রক্তপাত হতে পারে। এই সমস্যা কয়েক মাস ব্যবহারে ঠিক হয়ে যায়। পরীক্ষার দেখা গেছে, ড্রসলিন ব্যবহারের শুরুর সাথে অনিয়মিত রক্তপাত হয় ৬৪.৪% মহিলাদের। যেটা কমে ৪০.৩% হয় ১৩-তম সপ্তাহে। যদি নির্ধারিত সময়ে মাসিক না হয়, সেক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর গর্ভধারনের সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে গর্ভধারন নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

হতাশা: ড্রসলিন সেবনে যদি ব্যবহারকারী গুরুতরভাবে উদ্বিগ্ন অথবা হতাশ হয়ে পড়েন, সেক্ষেত্রে সেবন বন্ধ করতে হবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Oral Contraceptive preparations

সংরক্ষণ

৩০° সে. এর নিচে ও শুষ্ক স্থানে সংরক্ষন করতে হবে। আলো থেকে দূরে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
Pack Image of Droslyn 4 mg Tablet Pack Image: Droslyn 4 mg Tablet