নির্দেশনা

প্যালোনোসেট্রন নিম্নোক্ত উপসর্গে নির্দেশিত-
  • তাৎক্ষণিক ও বিলম্বিত বমির উদ্রেগ ও বমি প্রতিরোধে
  • অনিয়ন্ত্রিত বমির উদ্রেগ ও বমি প্রতিরোধে
  • মধ্যম ও উচ্চমাত্রার ইমিটোজেনিক কেমোথেরাপী এবং রেডিওথেরাপী দ্বারা সৃষ্ট থেরাপীর প্রথম ও পরবর্তী প্রতি কোর্সের ক্ষেত্রে বমির উদ্রেগ ও বমি প্রতিরোধে
  • অস্ত্রোপচার পরবর্তী বমির উদ্রেগ ও বমি প্রতিরোধে।

ফার্মাকোলজি

প্যালোনোসেট্রন একটি ৫-এইচটি৩ রিসেপ্টর এন্টাগোনিষ্ট যার উক্ত রিসেপ্টরের প্রতি অত্যধিক আসক্তি রয়েছে এবং অন্যান্য রিসেপ্টরের প্রতি আসক্তি অত্যন্ত কম অথবা নেই বললেই চলে। ধারনা করা হয় যে, কেমোথেরাপীর উপাদান ক্ষুদ্রান্ত্রের এন্টারোক্রোমাফিন কোষ থেকে সেরোটোনিন নি:সরনের মাধ্যমে বমি ও বমির উদ্রেগ সৃষ্টি করে এবং তারপর এই নিঃসরিত সেরোটোনিন প্রান্তীয় ভেগাস স্নায়ুতে ও কেন্দ্রীয় কেমোরিসেপ্টর ট্রিগার জোনের এরিয়া পস্ট্রেমাতে অবস্থিত ৫-এইচটি৩ রিসেপ্টরকে সক্রিয়করণের মাধ্যমে বমির উদ্রেগ করে। অস্ত্রোপচার পরবর্তী বমির উদ্রেগ ও বমি বিষয়টি বিভিন্ন রোগী, অস্ত্রোপচার এবং অবশ্যকারক উপাদান সম্পর্কিত ফ্যাক্টর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে এবং মস্তিক ও পরিপাকতন্ত্রে থাকা ৫-এইচটি৩ নিঃসরণের মাধ্যমে ত্বরানিত হয়। দেখা গিয়েছে যে, ৫-এইচটি৩ রিসেপ্টর বমির উদ্রেগ তৈরীতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। প্যালোনোসেট্রন বিশেষ ধরনের রিসেপ্টর ৫-এইচটি৩ এর সাথে সেরোটোনিনের ক্রিয়া বন্ধের মাধ্যমে কাজ করে। সাধারণত এটি ক্ষুদ্রান্ত্রে কাজ করে। কিন্তু মস্তিষ্কেও এটি কাজ করে থাকতে পারে।

শরীরের উপর ক্রিয়াঃ সুস্থ মানুষ ও ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে ১-৯০ মাইক্রোগ্রাম/কেজি মাত্রাসীমায় প্যালোনোসেট্রন সরল মাত্রানুপাতে ফার্মাকোকাইনেটিকস্ দেখায়। এই মাত্রাসীমার মধ্যে প্রয়োগকৃত রোগীর ক্ষেত্রে একক মাত্রার প্যালোনোসেট্রন এর গড় সর্বোচ্চ প্লাজমা ঘনত্ব ০.৮৯-৩৩৬ ন্যানোগ্রাম/মি.লি. এবং শূন্য থেকে অসীম সীমায় এর 'এরিয়া আন্ডার প্লাজমা ঘনত্ব-সময় কার্ভ' হচ্ছে ১৩.৮-৯৫৭ ন্যানোগ্রাম/ঘন্টা/মি.লি.। প্যালোনোট্রেন এর সরবরাহ আয়তন প্রায় ৬.৯-৭.৯ লি./কেজি এবং এর প্লাজমা প্রোটিন সংযুক্ততা ৬২%। প্রয়োগকৃত প্যালোনোস্ট্রেন এর প্রায় ৫০% দুটি নিষ্ক্রিয় বিপাকীয় পদার্থে রূপান্তরিত হয়, যাদের ১% এরও কম ৫-এইচটি৩ রিসেপ্টর বিরোধী কার্যকারিতা প্রদর্শন করতে সক্ষম। প্রয়োগকৃত ওষুধের প্রায় ৪০% কিডনীর সাহায্যে এবং ৫০% যকৃতের CYP2D6 ( প্রধানত), CYP3A4 এবং CYP1A2 আইসোএনজাইম-এর সাহায্যে বিপাক হয়। শিরাপথে প্রয়োগকৃত ওষুধের প্রায় ৫০% ১৪৪ ঘন্টা পর অপরিবর্তীত অবস্থায় নির্গত হয়। সুস্থ ব্যক্তির দেহ হতে প্যালোনোসেট্রন এর সার্বিক নিঃসরন ১৬০±৩৫ মি.লি./ঘন্টা/কেজি এবং মুত্রের মাধ্যমে নিঃসরন ৬৬.৫±১৮.২ মি.লি./ঘন্টা/কেজি। প্যালোনোট্রেন বর্ধিত অর্ধায়ু (৪০ ঘন্টা) প্রদর্শন করে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

সাধারণ মাত্রা: প্রাপ্তবয়স্ক (ট্যাবলেট): ০.৫ মি.গ্রা. এর একটি ট্যাবলেট দিনে একবার সেবন করতে হবে।

প্রাপ্তবয়স্ক (ইনজেকশন): ০.০৭৫ মি.গ্রা. এর ইনজেকশন একক মাত্রায় ১০ সেকেন্ড ধরে শিরাপথে প্রয়োগ করতে হবে।

মধ্যম ও উচ্চমাত্রার ইমিটোজেনিক কেমোথেরাপী দ্বারা সৃষ্ট বমির উদ্রেগ ও বমি প্রতিরোধে:
  • প্রাপ্তবয়স্ক (ট্যাবলেট): থেরাপী শুরুর ১ ঘন্টা আগে ০.৫ মি.গ্রা. এর একটি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে।
  • প্রাপ্তবয়স্ক (ইনজেকশন): থেরাপী শুরুর ৩০ মিনিট আগে ০.২৫ মি.গ্রা. এর ইনজেকশন একক মাত্রায় শিরাপথে ৩০ সেকেন্ড ধরে প্রয়োগ করতে হবে।
রেডিওথেরাপী দ্বারা সৃষ্ট বমির উদ্রেগ ও বমি প্রতিরোধে (ইনজেকশন): প্রতি সাপ্তাহিক রেডিয়েশন প্রয়োগের প্রায় ৩০ মিনিট আগে ০.২৫ মি.গ্রা. এর ইনজেকশন একক মাত্রায় শিরাপথে ৩০ সেকেন্ড ধরে প্রয়োগ করতে হবে।

অস্ত্রোপচার পরবর্তী বমির উদ্রেগ ও বমি প্রতিরোধে: এনেসথেশিয়ার প্রভাব শুরুর আগ মুহূর্তে ০.০৭৫ মি.গ্রা. এর ইনজেকশন একক মাত্রায় শিরাপথে ১০ সেকেন্ড ধরে প্রয়োগ করতে হবে।

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার (১ মাস থেকে ১৭ বছরের নীচে): প্যালোনোসেট্রন ২০ মাইক্রো গ্রাম/ কেজি একক মাত্রায় শিরাপথে প্রয়োগ করতে হবে। যা সর্বোচ্চ ১.৫ মি.গ্রা. এর বেশী নয়।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

নিয়ন্ত্রিত ক্লিনিক্যাল পরীক্ষণে কর্টিকোস্টেরয়েড, ব্যথানাশক, বমির উদ্রেগরোধী বা বমিরোধী, এন্টি স্পাসমোডিক, এবং এন্টি-কোলিনার্জিক ওষুধের সাথে প্যালোনোসেট্রন নিরাপদে প্রয়োগ করা গেছে এবং দেখা গেছে যে, এটি মিউরিন টিউমার মডেলে পরীক্ষিত পাঁচটি কেমোথেরাপিউটিক উপাদান যথা- সিস্‌প্লাটিন, সাইক্লোফসফামাইড, সাইটারাবিন, ডক্সোরুবিসিন এবং মাইটোমাইসিন সি এর টিউমাররোধী কার্যকারিতায় বাঁধাদান করেনি। প্যালোনোসেট্রন ও ম্যাটোক্লোপ্রামাইড একত্র প্রয়োগে উল্লেখযোগ্য কোন ফার্মাকোকাইনেটিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ইনভিট্রো পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, প্যালোনোসেট্রন CYP1A2, CYP2A6, CYP2B6, CYP2C9, CYP2D6, CYP2E1 & CYP3A4/5 (CYP2C19 অর্ন্তভুক্ত নয়) এনজাইম সিস্টেমকে বাঁধা প্রদান করেনা এমনকি CYP1A2, CYP2D6 or CYP3A4/5 এনজাইম সিস্টেমের কার্যক্রমকে সক্রিয় করতে কোন ভূমিকা পালন করেনা। ফলে প্যালোনোসেট্রন এর সাথে অন্যান্য ওষুধের প্রতিক্রিয়া খুবই সামান্য।

প্রতিনির্দেশনা

প্যালোনোসেট্রন কিংবা এর কোনো উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীল রোগীদের প্রতি এটি প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

প্যালোনোসেট্রন ব্যবহারে সবচেয়ে বেশী হতে পারে এমন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হচ্ছে মাথাব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিণ্য।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় ব্যবহারে প্যালোনোসেট্রন 'বি' শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত। মাতৃদুগ্ধের সাথে প্যালোনোসেট্রন নিঃসরিত হয় কিনা তা জানা যায়নি।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: ৬৫ বছর বা তার বেশী বয়সের রোগীদের ক্ষেত্রে প্যালোনোসেট্রন এর মাত্রা সমন্বয়ের দরকার নেই।

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: (১ মাস থেকে ১৭ বছরের নীচে): প্যালোনোসেট্রন ২০ মাইক্রো গ্রাম/ কেজি একক মাত্রায় শিরাপথে প্রয়োগ করতে হবে। যা সর্বোচ্চ ১.৫ মি.গ্রা. এর বেশী নয়।

কিডনী ও যকৃতের কার্যক্রমে বাঁধাগ্রস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: কিডনী ও যকৃতের জটিলতায় প্যালোনোসেট্রন এর মাত্রা সমন্বয়ের দরকার নেই।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Anti-emetic drugs

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে, ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে রাখুন।