ব্রিভারাসিটাম

নির্দেশনা

ব্রিভারাসিটাম ১ বছর ও এর বেশি বয়সী রোগীদের পার্সিয়াল অনসেট সিজারের চিকিৎসায় নির্দেশিত।

ফার্মাকোলজি

ব্রিভারাসিটাম একটি খিঁচুনি প্রতিরোধী ওষুধ। ব্রিভারাসিটামের খিঁচুনি বিরোধী কার্যপ্রণালী এখনও সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। ব্রিভারাসিটাম মস্তিস্কে সুনির্দিষ্টভাবে সিনাপটিক ভেসিকল প্রোটিন 2A (SV2A) এর প্রতি উচ্চ এবং সুনির্দিষ্ট আকর্ষণ প্রদর্শন করে, যা ব্রিভারাসিটামের অ্যান্টিকনভালসেন্ট কার্যকারিতা প্রদর্শনে ভূমিকা রাখতে পারে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ব্রিভারাসিটাম ট্যাবলেট অথবা ওরাল সল্যুশন মুখে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এটি খাবারের আগে অথবা পরে গ্রহণ করা যেতে পারে। ১ মাস ও এর বেশি বয়সী রোগীদের জন্য নির্দেশিত মাত্রা নিচে দেয়া হয়েছে। যে সকল শিশুর ওজন ৫০ কেজির কম, তাদের ক্ষেত্রে ওজনের উপর ভিত্তি করে ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। চিকিৎসা শুরুর সময় ধীরে ধীরে মাত্রা বৃদ্ধির কোন প্রয়োজন নেই। ক্লিনিক্যাল প্রতিক্রিয়া ও সহনশীলতার উপর ভিত্তি করে মাত্রা সমন্বয় করতে হবে।

প্রাপ্ত বয়স্ক (১৬ বছর ও এর বেশি বয়সী)-
  • প্রারম্ভিক মাত্রা: ৫০ মিগ্রা করে দিনে ২ বার (দৈনিক ১০০ মিগ্রা)
  • সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মেইনটেন্যান্স মাত্রা: ২৫ মিগ্রা থেকে ১০০ মিগ্রা করে দিনে ২ বার (দৈনিক ৫০ মিগ্রা থেকে ২০০ মিগ্রা)
যে সকল শিশুর ওজন ৫০ কেজি ও এর বেশি-
  • প্রারম্ভিক মাত্রা: ২৫ মিগ্রা থেকে ৫০ মিগ্রা করে দিনে ২ বার (দৈনিক ৫০ মিগ্রা থেকে ১০০ মিগ্রা)
  • সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মেইনটেন্যান্স মাত্রা: ২৫ মিগ্রা থেকে ১০০ মিগ্রা করে দিনে ২ বার (দৈনিক ৫০ মিগ্রা থেকে ২০০ মিগ্রা)
যে সকল শিশুর ওজন ২০ কেজি থেকে ৫০ কেজি এর মধ্যে-
  • প্রারম্ভিক মাত্রা: ০.৫ মিগ্রা/কেজি থেকে ১ মিগ্রা/কেজি করে দিনে ২ বার (দৈনিক ১ মিগ্রা/কেজি থেকে ২ মিগ্রা/কেজি)
  • সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মেইনটেন্যান্স মাত্রা: ০.৫ মিগ্রা/কেজি থেকে ২ মিগ্রা/কেজি করে দিনে ২ বার (দৈনিক ১ মিগ্রা/কেজি থেকে ৪ মিগ্রা/কেজি)
যে সকল শিশুর ওজন ১১ কেজি থেকে ২০ কেজি এর মধ্যে-
  • প্রারম্ভিক মাত্রা: ০.৫ মিগ্রা/কেজি থেকে ১.২৫ মিগ্রা/কেজি করে দিনে ২ বার (দৈনিক ১ মিগ্রা/কেজি থেকে ২.৫ মিগ্রা/কেজি)
  • সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মেইনটেন্যান্স মাত্রা: ০.৫ মিগ্রা/কেজি থেকে ২.৫ মিগ্রা/কেজি করে দিনে ২ বার (দৈনিক ১ মিগ্রা/কেজি থেকে ৫ মিগ্রা/কেজি)
যে সকল শিশুর ওজন ১১ কেজির কম-
  • প্রারম্ভিক মাত্রা: ০.৭৫ মিগ্রা/কেজি থেকে ১.৫ মিগ্রা/কেজি করে দিনে ২ বার (দৈনিক ১.৫ মিগ্রা/কেজি থেকে ৩ মিগ্রা/কেজি)
  • সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মেইনটেন্যান্স মাত্রা: ০.৭৫ মিগ্রা/কেজি থেকে ৩ মিগ্রা/কেজি করে দিনে ২ বার (দৈনিক ১.৫ মিগ্রা/কেজি থেকে ৬ মিগ্রা/কেজি)
প্রবীণদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: প্রবীণদের ক্ষেত্রে ব্রিভারাসিটামের মাত্রা বিবেচনা করে নির্ধারণ করা উচিত। সাধারণত সর্বনিম্ন মাত্রা থেকে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। 

বৃক্কের অকার্যকারিতায়: বৃক্কের অকার্যকারিতায় মাত্রা সমন্বয়ের প্রয়োজন নেই। তবে এন্ড স্টেজ রেনাল ডিজিজের যে সকল রোগীর ডায়ালাইসিস চলছে তাদের ক্ষেত্রে ব্রিভারাসিটাম নির্দেশিত নয়।

শিশু ও কিশোরদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: ১ মাস এর কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এর নিরাপদ ব্যবহার ও কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

অন্য ওষুধের সাথেঃ CYP2C19 ইনডাকশনের কারণে রিফামপিনের সাথে একত্রে ব্যবহারে রক্তে ব্রিভারাসিটামের মাত্রা হ্রাস পায়। যে সকল রোগী রিফামপিন দ্বারা চিকিৎসা পাচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে একত্রে ব্যবহারের সময় ব্রিভারাসিটামের মাত্রা ১০০% পর্যন্ত (দ্বিগুণ মাত্রা) বৃদ্ধি করতে হতে পারে। কার্বামাজেপিনের সাথে একত্রে ব্যবহারে কার্বামাজেপিনের সক্রিয় মেটাবোলাইট কার্বামাজেপিন-ইপোক্সাইডের প্রতি এক্সপোজার বৃদ্ধি পেতে পারে । একত্রে ব্যবহারে সহনশীলতার সমস্যা দেখা দিলে সেক্ষেত্রে কার্বামাজেপিনের মাত্রা হ্রাসের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। ব্রিভারাসিটাম রক্তে ফেনাইটোয়িনের মাত্রা বৃদ্ধি করে বলে ফেনাইটোয়িনের সাথে একত্রে ব্রিভারাসিটামের ব্যবহার শুরুর সময় অথবা একত্রে ব্যবহার থেকে ব্রিভারাসিটাম বাদ দেয়ার সময় রক্তে ফেনাইটোয়িনের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। লেভেটাইরাসিটামের সাথে ব্রিভারাসিটামের একত্রে ব্যবহারের ফলে কোনো অতিরিক্ত থেরাপিউটিক সুবিধা পাওয়া যায়নি।

প্রতিনির্দেশনা

যাদের ব্রিভারাসিটাম বা এই ওষুধের অন্যান্য উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ব্রিভারাসিটাম প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো হলো বমি বমি ভাব/বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, নিদ্রালুতা এবং ঘুম ঘুম ভাব, মাথা ঘোরা, সেরেবেলার কোঅর্ডিনেশন ও ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা এবং খিটখিটে মেজাজ।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

সুস্পষ্টভাবে প্রয়োজন না হলে (ভ্রূণের সম্ভাব্য ঝুঁকি অপেক্ষা মায়ের প্রত্যাশিত উপকারিতা বেশি না হলে) গর্ভাবস্থায় ব্রিভারাসিটাম ব্যবহার করা উচিত নয়। মাতৃদুগ্ধে ব্রিভারাসিটামের উপস্থিতি এবং মায়ের দুধ পাচ্ছে এরকম শিশুর উপর ও দুধ নিঃসরণের উপর এর প্রভাব সম্বন্ধে জানা যায়নি। ব্রিভারাসিটাম প্রদানের ক্ষেত্রে স্তন্যদানকারী মায়ের প্রয়োজনীয়তা এবং মায়ের কোনো শারীরিক সমস্যা বিবেচনা করার সাথে সাথে মায়ের দুধ পানকারী শিশুর সম্ভাব্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া এবং বৃদ্ধিগত ও স্বাস্থ্যগত উপকারিতা বিবেচনা করতে হবে।

সতর্কতা

ব্রিভারাসিটামসহ অন্যান্য খিচুনিরোধী ওষুধগুলো আত্মহত্যামূলক চিন্তাভাবনা ও আচরণের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। যে সকল রোগী খিঁচুনিরোধী ওষুধ পাচ্ছে তাদেরকে মানসিক হতাশার সূচনা বা বৃদ্ধি, আত্মহত্যামূলক চিন্তাভাবনা বা আচরণ এবং মেজাজ বা আচরণে কোন অস্বাভাবিক পরিবর্তনের জন্য পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ব্রিভারাসিটাম নিদ্রালুতা, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা এবং কোঅর্ডিনেশনে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। রোগীদের মধ্যে এ লক্ষণগুলো দেখা দেয় কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং রোগীদেরকে গাড়ি ও অন্যান্য মেশিন চালনা থেকে বিরত থাকতে উপদেশ দিতে হবে। ব্রিভারাসিটাম সাইকিয়াট্রিক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে যা নন-সাইকোটিক লক্ষণসমূহ (খিটখিটে মেজাজ, দুশ্চিন্তা, স্নায়বিক দুর্বলাবস্থা, আগ্রাসী মনোভাব, বিদ্রোহী মনোভাব, রাগ, উৎকণ্ঠা, অস্থিরতা, হতাশা, বিষণ্ণ মেজাজ, কান্নার ভাব, উদাসীনতা, মেজাজ পরিবর্তন, সাইকোমোটর হাইপারএ্যাকটিভিটি, অস্বাভাবিক আচরণ এবং সমন্বয়ে সমস্যা) এবং সাইকোটিক লক্ষণসমূহ (হ্যালুসিনেশন, ভ্রম, তীব্র সাইকোসিস ও উন্মত্ত আচরণ) উভয়ের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। সিজারের হার বৃদ্ধি এবং স্ট্যাটাস এপিলেপ্টিকাসের ঝুঁকি থাকায় ব্রিভারাসিটাম বন্ধের সময় ধীরে ধীরে বন্ধ করতে হবে।

মাত্রাধিক্যতা

ব্রিভারাসিটামের মাত্রাধিক্যের ফলে সৃষ্ট বিরূপ প্রতিক্রিয়াগুলো হলো মাথা ঘোরা, ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা, দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, ডিপ্লোপিয়া, দুশ্চিন্তা এবং হৃৎস্পন্দনের গতি হ্রাস। ব্রিভারাসিটামের কোন নির্দিষ্ট প্রতিষেধক নেই। যে কোন মাত্রাধিক্যের ক্ষেত্রে যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে এক্ষেত্রেও তাই অনুসরণ করতে হবে। শ্বাসনালীর সুরক্ষা, অক্সিজেনেশন এবং ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করতে হবে। হৃৎস্পন্দনের গতি ও ছন্দ এবং ভাইটাল সাইনগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Adjunct anti-epileptic drugs

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে, ঠাণ্ডা (৩০°সে. এর নিচে) ও শুষ্ক স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।