কিটোপ্রোফেন

নির্দেশনা

পেশীর সাথে সম্পর্কযুক্ত মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের স্থানীয় ব্যথাযুক্ত উপসর্গসমূহের চিকিৎসায় এবং/অথবা অস্থিসন্ধির আঘাত যেমন- খেলাধুলা জনিত আঘাতে কিটোপ্রােফেন নির্দেশিত।

মাত্রা ও সেবনবিধি

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে: ব্যথাযুক্ত অথবা প্রদাহযুক্ত স্থানে দিনে দুই থেকে তিনবার জেলটি ব্যবহার করা উচিত। জেলটি এমন পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত যাতে এটি ব্যথাযুক্ত স্থানটিকে আবৃত করে রাখে। দৈনিক ব্যবহারের মাত্রা ১৫ গ্রাম এর বেশি অতিক্রম করা যাবেনা। এক সপ্তাহের বেশি ধরে কিটোপ্রােফেন জেল দিয়ে চিকিৎসার করা উচিৎ নয়। ত্বকের উপরে জেলটি দিয়ে কয়েক মিনিট ম্যাসেজ করা উচিৎ। 

শিশুদের ক্ষেত্রে: কিটোপ্রােফেন জেল এর নিরাপত্তা এবং কার্যকারীতা শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

যেহেতু ত্বকের উপরে প্রয়ােগ করার পর সিরামে (রক্তে) ওষুধের ঘনত্ব কম থাকে তাই পারস্পরিক ক্রিয়ার সম্ভাবনাও অনেক কম।

প্রতিনির্দেশনা

গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে (শেষ তিন মাসে) কিটোপ্রােফেন প্রতিনির্দেশিত। কিটোপ্রােফেন জেল নিম্নলিখিত রােগীদের ক্ষেত্রে কোন ভাবেই ব্যবহার করা যাবে না যাদের:
  • কিটোপ্রােফেন, ফেনােফাইব্রেট, টাইয়াপ্রােফেনিক এ্যাসিড, এ্যাসিটাইল স্যালিসাইলিক এ্যাসিড অথবা অন্য কোন নন-স্টেরয়ডাল এ্যান্টি-ইনফ্লামেটরী (ব্যথানাশক) উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া যেমন- হাঁপনীর উপসর্গ, আলােক সংবেদনশীলতা জনিত প্রতিক্রিয়ার পূর্ব ইতিহাস রয়েছে। এ্যালার্জিক রাইনাইটিস অথবা আর্টিকারিয়া (চুলকানী) রয়েছে।
  • অন্য কোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীলতার পূর্ব ইতিহাস রয়েছে।
  • আলোক সংবেদনশীলতা জনিত প্রতিক্রিয়ার পূর্ব ইতিহাস রয়েছে।
  • কিটোপ্রােফেন, টাইয়াপ্রােফেনিক এ্যাসিড, ফেনােফাইব্রেট, ইউভি ব্লকারস্ (অতিবেগুনী রশ্মির বাঁধাদানকারী উপাদান) অথবা পারফিউমস্ (সুগন্ধী) এর প্রতি ত্বকের প্রতিক্রিয়ার পূর্ব ইতিহাস রয়েছে।
কিটোপ্রােফেন জেল ব্যবহারে রােগাক্রান্ত ত্বকের পরিবর্তন ঘটে এমন ক্ষেত্রে যেমন- একজিমা, ব্রণ; সংক্রমিত ত্বক, উন্মুক্ত ক্ষতে কোন ভাবেই ব্যবহার করা যাবেনা। চিকিৎসার সময় এবং চিকিৎসা শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ পরে যদি কেউ সূর্যের আলাে, কখনাে কুয়াশাচ্ছন্ন সূর্য, সােলারিয়াম থেকে নির্গত অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকতে না পারেন সেক্ষেত্রে প্রােফিনিড জেল ব্যবহার করা যাবেনা।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

ইমিউনি সিস্টেম (রােগপ্রতিরােধ তন্ত্র) সংক্রান্ত সমস্যা- জানা যায়নি: এ্যানাফাইলেকটিক শক, এ্যানজিওইডিমা,অতিসংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া।

গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইন সংক্রান্ত (বিপাকিয়) সমস্যা- যদিও প্রয়ােগের পরে রক্তে কিটোপ্রােফেনের পরিমাণ মুখে সেবনযােগ্য কিটোপ্রােফেন অপেক্ষা অনেক কম থাকে,তবুও কি পরিমাণ জেল ব্যবহার করা হয়েছে এবং ত্বকের কতটুকু অংশজুড়ে জেল প্রয়ােগ করা হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে বিরল কিছু ক্ষেত্রে রক্তের মধ্যমে তৈরী বিপাকিয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া (যেমন- বমিবমি ভাব, পেট ব্যথা, বমি এবং পেট ফাঁপা) ঘটার সম্ভবনা রয়েছে। মাঝে মাঝে: বমিবমি ভাব। জানা যায়নি: পেট ব্যথা, বমি, পেট ফাঁপা

ত্বক এবং ত্বকের নিচের কলার সমস্যা- মাঝে মাঝে: ত্বকের ফুসকুড়ি ভাব, চুলকানি, একজিমা। বিরল: আলােকসংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া, ত্বকের প্রদাহ, ফুসকুড়ি, আর্টিকারিয়া (চুলকানী)। এছাড়া ত্বকের প্রয়ােগের স্থানের প্রতিক্রিয়ারও তথ্য পাওয়া গেছে যা প্রয়ােগ স্থানের। বাইরেও ছড়াতে পারে। জানা যায়নি: জ্বালাপােড়ার অনুভুতি, ষ্টিভেন-জনসন সিন্ড্রোম।

কিডনী (বন্ধু) এবং মুত্রতন্ত্রের সমস্যা- খুবই বিরল: কিডনীর অকার্যকারীতা বেড়ে যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থার প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারের সময় (প্রথম ও দ্বিতীয় তিন মাসে) গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে কিটোপ্রােফেন এর নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়নি, তাই গর্ভাবস্থার প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারের সময় (প্রথম ও দ্বিতীয় তিন মাসে) প্রােফিনিড প্রয়ােগ করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের ক্ষেত্রে (তৃতীয় তিন মাসে) গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের সময় (তৃতীয় তিন মাসে), কিটোপ্রােফেনসহ সমস্ত প্রােস্টাগ্ল্যানভিন সিস্থেটেস ইনহিবিটরসমূহ ক্রুণের কার্ডিওপালমােনারী (হৃদপিন্ড ও ফুসফুস সংক্রান্ত) এবং কিডনীর টক্সিসিটি (বৃক্কের বিষক্রিয়া) বৃদ্ধি করতে পারে। তাছাড়া এটি প্রসব পরবর্তি মা ও শিশু উভয়ের ক্ষেত্রেই রক্তক্ষরণের সময় বৃদ্ধি করতে পারে। 

কিটোপ্রােফেন স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে নির্দেশিত নয়।

সতর্কতা

  • যেসকল রােগীর হৃদপিন্ড, যকৃত অথবা কিডনীর (বৃক্কের) কার্যকারিতা হ্রাস পেয়েছে তাদের ক্ষেত্রে জেলটি সাবধানতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।
  • অকলিউসিভ ড্রেসিং (আঠালাে ব্যান্ডেজ বা পট্টি) সহযােগে জেলটি কোন ভাবেই ব্যবহার করা যাবেনা।
  • জেলটি যেন কোন ভাবেই চোখের সংস্পর্শে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • ষ্টিভেন-জনসন সিন্ড্রোম (এস জে এস)-এর মত গুরুতর ত্বকের প্রতিক্রিয়াগুলির সাথে এনএসআইডি ব্যবহারের সম্পর্ক রয়েছে যার মধ্যে কিটোপ্রােফেন জেল ও আছে। রােগীদের ত্বকের গুরুতর লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। চামড়ায় ফুসকুড়ি, মিউকাসে ক্ষত অথবা অতিসংবেদনশীলতার অন্য কোন লক্ষণ আি বর্ভূত হলে সাথে সাথে চিকিৎসা বন্ধ করতে হবে।
  • অক্টোক্রাইলিন আছে এমন উপাদানের সাথে একত্রে ব্যবহারের পরে যদি ত্বকের উপর কোন ধরণের প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা বন্ধ করা উচিত।
  • বাইরে যাওয়ার সময় প্রয়ােগ স্থানটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে, এমনকি সূর্যের সরাসরি আলাের অনুপস্থিতেও এটি মেনে চলতে হবে। আলােক সংবেদনশীলতার ঝুঁকি এড়ানাের জন্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করার সময় এবং চিকিৎসা বন্ধ করার পরবর্তি দুই সপ্তাহ পর্যন্ত এটি মেনে চলা উচিত।
  • জেলটি প্রতিবার প্রয়ােগ করার পর যত্নসহকারে এবং দীর্ঘ সময় ধরে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।

মাত্রাধিক্যতা

যেহেতু এটি ত্বকের উপরে প্রয়ােগ করা হয় তাই এক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ততার সম্ভাবনা কম। যদি দূর্ঘটনাক্রমে কেউ এটি খেয়ে ফেলে, সেক্ষেত্রে কি পরিমাণ খেয়ে ফেলেছে তার উপর নির্ভর করে রক্তের মাধ্যমে হওয়া বিরূপ প্রতিক্রিয়া সমূহ ঘটতে পারে। যদি এমনটি ঘটে, তবে মুখে সেব্য এ্যান্টিইনফ্লামেটরি ওষুধের মাত্রাতিরিক্ততার চিকিৎসা অনুযায়ী উপসর্গগত এবং সহায়ক চিকিৎসা করা উচিত।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Non-steroidal Anti-inflammatory Drugs (NSAIDs)

সংরক্ষণ

২৫°সে, তাপমাত্রার নিচে সংরক্ষণ করুন। ব্যবহারের পরে টিউবটি বন্ধ রাখুন। সমস্ত ওষুধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ব্যবহার করা যাবেনা। শুধুমাত্র রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিক্রয়, বিতরণ ও সেবনযােগ্য।