ইস্ট্রাডিওল ভ্যালিরেট

নির্দেশনা

ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ইউএসপি ১ মিঃগ্রাঃ হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপির মাধ্যমে মহিলাদের ঋতুজরা উপসর্গ নিরাময়ে নির্দেশিত। ঋতুজরা মহিলাদের ওস্টিওপরোসিস প্রতিরোধে এটি ব্যবহৃত হয়।

ফার্মাকোলজি

ইস্ট্রাডিয়ল টার্গেট কোষ (যেমনঃ মহিলা জননাঙ্গ, স্তন, হাইপোথ্যালামাস, পিটুইটারী) ইত্যাদির রিসেপ্টরে সহজেই সংযোজিত হতে পারে। ইস্ট্রোজেন রিসেপ্টর লিগ্যান্ডে সংযোজিত হয়ে নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করে যা জিন ট্রান্সক্রিপশনের মাধ্যমে মেসেঞ্জার RNA তৈরি করে। এই RNA, রাইবোজমের সাথে বিক্রিয়া করে নির্দিষ্ট প্রোটিন তৈরি করে যা টার্গেট কোষে ইস্ট্রাডিয়ল এর কার্যকারিতা প্রদর্শন করে। ইস্ট্রোজেন সেক্স হরমোন বাইন্ডিং গ্লোবিউলিন, থাইরোয়েড বাইন্ডিং গ্রোবিউলিন এবং অন্যান্য সেরাম প্রোটিনের পরিমান বাড়ায়, ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোনের প্রভাব কমায়।

শোষন: মুখে সেবনের সাথে সাথেই এটি পুরোপুরি শরীরে শোষিত হয়।
বিপাক: ইস্ট্রোজেন সাইট্রোক্রম পি-৪৫০ এর মাধ্যমে বিপাকে অংশ নেয়।
রেচন: ইস্ট্রাডিয়ল, ইস্ট্রোন এবং ইস্ট্রোল প্রসাবের সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট হচ্ছে একটি ইস্ট্রোজেন। প্রতিদিন ১টি করে ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। প্রতিদিন একই সময়ে ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। একটি প্যাাকেট শেষ হলে সাথে সাথেই পরবর্তী প্যাকেট শুরু করতে হবে। ১ মিঃগ্রাঃ ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ট্যাবলেট দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। কাজ না হলে ২ মিঃগ্রাঃ দেওয়া যেতে পারে। উপসর্গ নিরাময় হলে পরবর্তীতে ১ মিঃগ্রাঃ ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ট্যাবলেট চালিয়ে যেতে হবে।

মহিলাদের অক্ষত জরায়ুর ক্ষেত্রে, ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ট্যাবেলট সেবনের ১২-১৪ দিন পর পর প্রজেস্টেরন সেবন চালিয়ে যেতে হবে চক্রের ২৮ দিন পর্যন্ত।

কীভাবে ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ট্যাবলেট শুরু করবেন: মহিলার মাসিক থাকলে, মাসিকের শুরুর দিন ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ট্যাবলেট ও একটি প্রজেস্টজেন সেবন করতে হবে। মাসিক অনিয়মিত কিংবা বন্ধ হয়ে গেলে যেকোন দিনে ট্যাবলেট সেবন শুরু করতে পারবেন (যদি গর্ভবতী না হয়ে থাকেন)।

ঔষধ সেবনে ভুলে গেলে করনীয়: কোন ট্যাবলেট খেতে ভুলে গেলে তা মনে পড়ার ১২ ঘন্টার মাধ্যে সেবন করতে হবে। ১২ ঘন্টার পর মনে পড়লে একই সময়ে দুটো ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। ঔষধ সেবনে ভুলে গেলে ফোঁটা ফোঁটা রক্তপাত হতে পারে।

ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ট্যাবলেট বাচ্চাদের জন্য প্রয়োজ্য নয়। ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ট্যাবলেট খাবার আগে কিংবা পরে সেবন করা যায়। এক গ্লাস পানি কিংবা এক গ্লাস দুধ এর সাথে সেবন করা উত্তম। ইস্ট্রাডিয়ল ভ্যালিরেট ট্যাবলেট প্রতিদিন একই সময়ে খেতে হবে।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন

প্রতিনির্দেশনা

  • পূর্বে কিংবা বর্তমানে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত
  • এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার
  • জননাঙ্গে রক্তপাত
  • এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লেসিয়া
  • পূর্বে কিংবা বর্তমানে ভেনাস থ্রম্বোএম্বোলিজম আছে এমন
  • থ্রম্বোফিলিক ডিসঅর্ডার
  • আর্টেরিয়াল থ্রম্বোএম্বোলিক ডিসিস
  • লিভার ডিসিস
  • ঔষধের কোন উপাদানের প্রতি অতি সংবেদনশীলতা
  • ফরফাইরিয়া

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

নিম্নোক্ত সমস্যাগুলো যারা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নিচ্ছেন তাদের মাঝে বেশি পরিলক্ষিত হয়।

গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
  • স্তন ক্যান্সার
  • এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্রাসিয়া
  • ওভারিয়ান ক্যান্সার
  • ভেনাস থ্রম্বোএম্বোলিজম
  • হৃদরোগ
  • স্ট্রোক
  • ৬৫ বছরের পর থেকে স্মৃতি লোপ পাওয়া
এছাড়াও আরোও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়। যেমনঃ
  • শুরুর প্রথম কয়েক মাসে ফোঁটা ফোঁটা রক্তপাত দেখা দিতে পারে। ঔষধ চলতে থাকলে এই সমস্যা ধীরে ধীরে চলে যায়
  • স্তনে ব্যথা, স্তন ঝুলে যাওয়া
  • মাসিকে ব্যথা, ডিম্বাশয়ে টিউমার, ডিম্বাশয়ে আকার পরিবর্তন হওয়া
  • বদহজম, পেটে ব্যথা, অস্বস্তি
  • ফুসকড়ি, চুলকানো, ব্রন, চর্মের রং পরিবর্তন হওয়া, চুল পড়া কিংবা গজানো
  • মাথা ব্যথা, মাইগ্রেন, মাথা ঝিমঝিম করা, উদ্বিগ্নতা, বিষন্নতা, দূর্বলতা
  • হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, উ”চ রক্তচাপ
  • শরীরে বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়া
  • ওজন পরিবর্তন হওয়া, ক্ষুধা লাগা
  • পা-ব্যথা, পেশীতে খিঁচুনি
  • নাক দিয়ে রক্তপাত, দেখতে সমস্যা হওয়া, এলার্জি, মূত্রথলিতে প্রদাহ
বিরুপ প্রতিক্রিয়াঃ
  • ক্যান্সার
  • স্তন ক্যান্সার, এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লোপ পাওয়া
  • অত্যাধিক সংবেদত্রশীলতা ঔষধের কার্যকরী উপাদানের প্রতি
  • ফরফাইরিয়া, গ্লুকোজ টলারেন্স কমে যাওয়া
  • মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়া
  • উদ্বিগ্নতা, বিষন্নতা, সেক্সের ইচ্ছে বেড়ে বা কমে যাওয়া
  • স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা
  • মাইগ্রেন, মাথা ব্যাথা, মাথা ঝিম ঝিম করা, দুর্বলতা স্ট্রোক
  • চোখে সমস্যা
  • দেখতে অসুবিধা হওয়া, কন্টাক্ট লেন্স পড়তে অসুবিধা
  • হৃদযন্ত্রে সমস্যা
  • মায়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন
  • ভাস্কুলার ডিসঅর্ডার
  • উচ্চ রক্তচাপ, ভেনাস থ্রম্বোএম্বোলিজম
  • শ্বাসযন্ত্রে সমস্যা
  • এপিসট্যাক্সিস
  • পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা
  • ডিসপেপসিয়া, পেটে ব্যাথা, বমি হওয়া, বমি বমি ভাব
  • হেপাটোবিলিয়ারি ডিসঅর্ডার
  • পিত্ত থলিতে রোগ
  • চর্মরোগ
  • চুলকানো, ফুসকুড়ি, ব্রন, মুখে অবাঞ্চিত লোম, চুল পড়া
  • পেশীতে খিঁচুনি, পা ব্যাথা
  • কিডনি সমস্যা
  • সিস্টাইটিস
  • জননাঙ্গ ও স্তনে সমস্যা

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

এই ঔষধ গর্ভকালীন সময়ে দেওয়া যাবে না। স্তন্যদায়ীদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়।

সতর্কতা

হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি কেবল তখনই ব্যবহার করতে হবে যখন ঋতুজরা উপসর্গগুলো স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত করবে। হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি ব্যবহারের ঝুঁকি, ঋতুজরা উপসর্গ নিরাময়ের ক্ষেত্রে সীমিত। এই থেরাপি ব্যবহার বয়স্ক মহিলাদের জন্য বেশি সুবিধাজনক।

হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি শুরু করার পূর্বে, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক শরীরিক ইতিহাস জানতে হবে। শারীরিক (যেমনঃ শ্রোনীদেশ ও স্তনের) পরীক্ষা করতে হবে। চিকিৎসা শুরুর পর প্রতিনিয়ত চেক-আপ করতে হবে। যদি ঔষধ ব্যবহারে স্তনের পরিবর্তন আসে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

যে সকল অবস্থায় রক্ষনাবেক্ষন করতে হবেঃ
  • লিওমায়োমা অথবা এন্ডোমেট্রিওসিস
  • থ্রম্বোএম্বোলিক ডিসঅর্ডার এর ঝুঁকি
  • ইস্ট্রোজেন সম্পর্কিত টিউমারের ঝুঁকি যেমন: স্তন ক্যান্সার
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • ডায়াবেটিস মেলিটাস
  • কোলেলিথিয়াসিস
  • মাইগ্রেন অথবা তীব্র মাথাব্যথা
  • এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়ার ইতিহাস আছে এমন
  • মৃগীরোগ
  • অ্যাজমা
  • অটোসক্লেরোসিস
  • হেরেডিটারী এনজিওইডিমা
যে সকল কারনে থেরাপি সাথে সাথে বন্ধ করে দিতে হবেঃ
  • জন্ডিস অথবা যকৃতের কার্যক্ষমতা লোপ পেলে
  • রক্তচাপ বেড়ে গেলে
  • মাইগ্রেন এর মতন মাথাব্যাথা
  • গর্ভবতী হলে

মাত্রাধিক্যতা

অত্যাধিক সেবনে বমি বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে। কিছু কিছু মহিলার ফোঁটা ফোঁটা রক্তপাত হতে পারে। এর কোন প্রতিষেধক নেই এবং উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Drugs for menopausal symptoms: Hormone replacement therapy, Female Sex hormones

সংরক্ষণ

৩০° সেঃ এর নিচে ও শুষ্ক স্থানে সংরক্ষন করতে হবে। আলো এবং বাচ্চাদের সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখতে হবে।