অ্যাসিটিলসিস্টাইন

নির্দেশনা

অ্যাসিটিলসিস্টাইন, পুরু এবং ভিসকস মিউকয়েড বা মিউকোপুরুলেন্ট নিঃসরণ যেমন: দীর্ঘস্থায়ী ব্রোঙ্কোপালমোনারি ডিজিজ (দীর্ঘস্থায়ী অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ব্রঙ্কাইটিসের সাথে এমফিসিমা, দীর্ঘস্থায়ী হাঁপানির ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কাইটিস); তীব্র ব্রোঙ্কোপালমোনারি রোগ (শ্বাসনালী মিউকাস প্লাগিংয়ের সাথে হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, ব্রোঙ্কোপনিউমোনিয়া, ট্র্যাচিওব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কিওলাইটিস, সিস্টিক ফাইব্রোসিসের ফুসফুসের জটিলতা, সার্জারির সাথে যুক্ত ফুসফুসের জটিলতা) এর মত নির্দিষ্ট কিছু ক্লিনিকাল অবস্থার একটি সহায়ক চিকিত্সা হিসাবে নির্দেশিত।

ফার্মাকোলজি

অ্যাসিটিলসিস্টাইন ​​হল একটি মিউকোলাইটিক এজেন্ট যা সম্ভবত মিউকোপ্রোটিনে ডাইসালফাইড বন্ডের বিভাজনের মাধ্যমে ক্ষরণের ভিসকসিটি হ্রাস করে। তাছাড়া এটি অ্যান্টিসিক্রেটরি ইফেস্ট দেয়। এর ফলে শ্বাসনালী পরিষ্কার হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সুবিধা হয়। ফ্রি রেডিক্যলের সাথে বিক্রিয়া করে এবং গ্লুটাথিয়নের প্রিকারসার হিসেবে কাজ করে, অ্যাসিটিলসিস্টাইনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য তৈরি হয়, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্ট্রা এবং এক্সট্রা-সেলুলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্রিয়া প্রদানের মাধ্যমে, এটি বহিরাগত এবং ভিতরগত অক্সিডেন্টগুলিকে নিরপেক্ষ করে, যা প্রকৃতপক্ষে শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহে প্যাথোজেন হিসাবে কাজ করে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

এফারভেসেন্ট ট্যাবলেট বা ডিসপারসিবল ট্যাবলেট: প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৬ বছরের ঊর্ধ্বে শিশু: প্রতিদিন ৬০০ মিগ্রা অ্যাসিটিলসিস্টাইনের একটি ইফারভেসেন্ট ট্যাবলেট সেব্য (বিশেষত সন্ধ্যায়)। একিউট চিকিৎসায় চিকিৎসার সময়কাল ৫ থেকে ১০ দিন হওয়া উচিত, এবং চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী এটি ক্রনিক কেয়ারে কয়েক মাস অব্যাহত রাখা যেতে পারে। একটি গ্লাসে অল্প পরিমাণ পানি নিয়ে ট্যাবলেটগুলোকে দ্রবীভূত করতে হবে, প্রয়োজনে একটি চামচ দিয়ে মিশিয়ে নেয়া যেতে পারে। এইভাবে একটি সুস্বাদু পানিয় পাওয়া যাবে, যা সরাসরি গ্লাস থেকে পান করা যেতে পারে।

এফারভেসেণ্ট গ্র্যানিউলস:
  • প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৬ বছরের ঊর্ধ্বে শিশু: ১ স্যাসেট অ্যাসিটিলসিস্টাইন ২০০ মিগ্রা এর বা ২ স্যাসেট এসিটাইলসিস্টাইন ১০০ মিগ্রা এর, দিনে ২-৩ বার সেব্য।
  • শিশু (২-৬ বছর বয়সী): বয়স অনুযায়ী ১ স্যাসেট অ্যাসিটিলসিস্টাইন ১০০ মিগ্রা এর দিনে ২ থেকে ৪ বার সেব্য।
একিউট চিকিৎসায় চিকিৎসার সময়কাল ৫ থেকে ১০ দিন হওয়া উচিত, এবং চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী এটি ক্রনিক কেয়ারে কয়েক মাস অব্যাহত রাখা যেতে পারে।

একটি গ্লাসে অল্প পরিমাণ পানি নিয়ে স্যাসেটের পুরো ঔষধটুকু দ্রবীভূত করতে হবে, প্রয়োজনে একটি চামচ দিয়ে মিশিয়ে নেয়া যেতে পারে। এইভাবে একটি সুস্বাদু পানিয় পাওয়া যাবে, যা সরাসরি গ্লাস থেকে পান করা যেতে পারে।

নেবুলাইজার সলিউশন: ইনজেকশনে ব্যাবহৃত সোডিয়াম ক্লোরাইড, ইনহেলেশনে ব্যাবহৃত সোডিয়াম ক্লোরাইড, ইনজেকশনে ব্যাবহৃত জীবাণুমুক্ত পানি বা ইনহেলেশনে ব্যাবহৃত জীবাণুমুক্ত পানি দিয়ে ২০% দ্রবণটি কম ঘনত্বে পাতলা করা যেতে পারে।
  • প্রাপ্তবয়স্ক: ৫-১০ মিলি ১০% বা ২০% দ্রবণ নেবুলাইজার দ্বারা প্রতি ৬-৮ ঘন্টা পিআরএন।
  • শিশু: ১-১১ মাস: ১-২ মিলি ২০% বা ২-৪ মিলি ১০% দ্রবণ নেবুলাইজার দ্বারা প্রতি ৬-৮ ঘন্টা পিআরএন।
  • ১২ মাস-১১ বছর: ৩-৫ মিলি ২০% বা ৬-১০ মিলি ১০% দ্রবণ নেবুলাইজার দ্বারা প্রতি ৬-৮ ঘন্টা পিআরএন।
  • ১২ বছরের নিচে: ৫-১০ মিলি ১০/২০% দ্রবণ নেবুলাইজার দ্বারা প্রতি ৬-৮ ঘন্টা পিআরএন।
** ডায়াগনস্টিক ব্রঙ্কোগ্রাম: ১-২ মিলি ২০% বা ২-৪ মিলি ১০% দ্রবণ ২-৩ বার নেবুলাইজেশনের মাধ্যমে বা প্রক্রিয়া শুরুর আগে ইন্ট্রাট্রাকিয়ালি ইনস্টিলেশনের মাধ্যমে।

** নেবুলাইজেশন টেন্ট বা ক্রুপেট: এই সেবনবিধিটির জন্য খুব বেশি পরিমাণে দ্রবণ প্রয়োজন, কখনও কখনও একবার চিকিত্সার সময় ৩০০ মিলি পর্যন্ত দ্রবণ প্রয়োজন হয়। যদি একটি টেন্ট বা ক্রুপেট ব্যবহার করা হয়, তাহলে প্রস্তাবিত ডোজ হল পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যাসিটাইলসিস্টাইন (২০% ব্যবহার করে) যা কাঙ্ক্ষিত সময়ের জন্য টেন্ট বা ক্রুপেটে খুব ভারী কুয়াশাছন্ন পরিবেশ বজায় রাখবে।

** ডাইরেক্ট ইন্সটিলেশন: যখন ডাইরেক্ট ইনস্টিলেশন ব্যবহার করা হয়, তখন ২০% দ্রবণের ১-২ মিলি প্রতি ঘন্টায় দেওয়া যেতে পারে। ট্র্যাকিওস্টোমি রোগীদের রুটিন নার্সিং কেয়ারের জন্য ব্যবহার করা হলে, ২০% দ্রবণের ১-২ মিলি প্রতি ১-৪ ঘন্টা অন্তর ট্র্যাকিওস্টোমিতে ইনস্টিলেশন দিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

এসিটাইলসিস্টিন এর থাইওল গ্রূপ কিছু এন্টিবায়োটিক যেমনঃ এমপিসিলিন, ট্রেট্রাসাইক্লিন, ম্যাক্রোলাইড, সেফালোসপরিনস, এমাইনোগ্লোইকোসাইড এবং এমফোটেরিসিন এর কার্যকারিতা কমাতে পারে। এসিটাইলসিস্টিনের সাথে এমোক্সোসিলিনের যুগ্নব্যবহারে টিস্যুর মধ্যে এমোক্সিসিলিনের এর মাত্রা বাড়াতে পারে। ফলে দুটি ঔষধ দুই ঘন্টা বিরতিতে ব্যবহার করা যুক্তিযুক্ত। এসিটাইলসিস্টিন থ্রোমবোসাইড জমাটে বাধা এবং রক্তনালী সপ্রসারণে নাইট্রোগ্লিসারিনের প্রভাব বৃদ্ধি করতে পারে।

প্রতিনির্দেশনা

অ্যাসিটিলসিস্টাইনের অতি সংবেদনশীলতা রয়েছে। অ্যাসিটাইলসিস্টাইনে অ্যাসপার্টাম থাকে, তাই এটি ফেনাইলকেটোনুরিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য নিষেধাজ্ঞাযুক্ত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সমস্ত ওষুধের মতো, অ্যাসিটিলসিস্টাইন ​​পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যদিও সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। খুব বিরল ক্ষেত্রে, গুরুতর ইমিউন প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে যেমন অ্যানাফাইল্যাকটিক শক এবং গুরুতর ত্বকের প্রতিক্রিয়া। বিরল ক্ষেত্রে মৌখিক সেবনের পরে শ্বাসকষ্ট, পেট খারাপ এবং ব্রঙ্কোস্পাজম হতে পারে। সবচেয়ে নিয়মিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হল মাথাব্যথা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, স্টোমাটাইটিস, প্রুরিটাস, আরটিকেরিয়া, বমি বমি ভাব, বমি, পেটে ব্যথা, জ্বর, রক্তচাপ কমে যাওয়া, ডায়রিয়া এবং কানে শব্দ হওয়া।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকালে চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেব্য।

সতর্কতা

ব্রঙ্কিয়াল হাঁপানিতে আক্রান্ত রোগীদের থেরাপি চলাকালীন কঠোরভাবে নিরীক্ষণে রাখতে হবে; ব্রঙ্কোস্পাজম ঘটলে, দ্রুত চিকিত্সা স্থগিত করা আবশ্যক। পেপটিক আলসারে আক্রান্ত বা পূর্বে আলসার ছিল এমন রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যেহেতু ভিসকোটিনে সোডিয়াম রয়েছে (প্রতি ডোজ ১৫৬.৯ মিলিগ্রাম) তাই রোগীদের উচিত একটি নিয়ন্ত্রিত সোডিয়াম ডায়েট মেইনটেন করা। সালফিউরিয়াসের গন্ধের সম্ভাব্য উপস্থিতি ঔষধ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না কারন এটি প্রিপারেসনে থাকা একটিভ ইনগ্রিডিয়েণ্টের একটি বৈশিষ্ট্য। ভিসকোটিন দ্রবণের সাথে অন্যান্য ওষুধ না মেশানো ভাল।

মাত্রাধিক্যতা

মাত্রাতিরিক্ত অ্যাসিটিলসিস্টাইন ​​সেবনে বমি বমি ভাব, বমি বা ডায়রিয়া হতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Antidote preparations, Cough expectorants & mucolytics

সংরক্ষণ

আলো ও তাপ থেকে দূরে শুষ্ক স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।