প্রোপানথেলিন ব্রোমাইড
নির্দেশনা
প্রোপানথেলিন ব্রোমাইড নিম্নোক্ত রোগের চিকিৎসায় নির্দেশিত-
- পেপটিক আলসার-এর চিকিৎসায় সংযুক্ত থেরাপির অংশ হিসেবে (গ্যাস্ট্রিক ও ডিওডেনাল)
- গ্যাস্ট্রাইটিস এর লক্ষণ উপশমে (পাকস্থলীর সমস্যা, অন্ত্রের রক্তক্ষরণ, বমিতে রক্তাভাব, মলে রক্তাভাব, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা)
- ডায়রিয়া সংক্রান্ত ইরিট্যাবল বাওয়েল সিনড্রোম এর লক্ষণসমূহের চিকিৎসায় (কোলনের প্রদাহ ও ফোলাভাব, অ্যাকিউট এন্টারোকোলাইটিস, পরিপাকতন্ত্রের অকার্যকারিতা ইত্যাদি)
- ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স
- লালা নিঃসরণ এবং অ্যানিউরেসিস নিয়ন্ত্রণে
- ল্যাক্টোজ ইন্টোলারেন্স এর উন্নতি সাধনে
- অতিরিক্ত ঘাম (হাইপারহাইড্রসিস) প্রতিরোধে।
ফার্মাকোলজি
প্রোপানথেলিন ব্রোমাইড দুইভাবে কাজ করে।
- এসিটাইলকোলিন রিসেপ্টরে নির্দিষ্ট এন্টিকোলিনার্জিক তথা এন্টিমাসকারিনিক প্রভাব।
- মসৃন পেশীর উপর সরাসরি মাসকুলেট্রপিক প্রভাব।
মাত্রা ও সেবনবিধি
প্রোপানথেলিন ব্রোমাইড এর প্রাথমিক মাত্রা দৈনিক ৭৫ মি.গ্রা.। প্রতিবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে ১টি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে (১৫ মি.গ্রা. প্রতিদিন তিনবার)। দুটি ট্যাবলেট শোবার আগে সেবন করতে হবে। রোগীর প্রতিক্রিয়া এবং সহ্যক্ষমতা ভেদে সেবনবিধি নির্ধারন করা যেতে পারে। তবে দৈনিক সর্বোচ্চ মাত্রা ১২০ মি.গ্রা. অতিক্রম করা উচিত নয়।
শিশুদের ক্ষেত্রেঃ শিশুদের ক্ষেত্রে প্রোপানথেলিন ব্রোমাইডের ব্যবহার সম্পর্কে কোন প্রতিষ্ঠিত তথ্য নেই।
শিশুদের ক্ষেত্রেঃ শিশুদের ক্ষেত্রে প্রোপানথেলিন ব্রোমাইডের ব্যবহার সম্পর্কে কোন প্রতিষ্ঠিত তথ্য নেই।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন
ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া
এন্টাসিড অথবা ডায়রিয়ার ওষুধসমূহ প্রোপানথেলিন এর শোষণপ্রক্রিয়া ব্যাহত করে। তাই এসব ওষুধ প্রোপানথেলিন খাবার দু'তিন ঘন্টা পূর্বে/পরে খাওয়া উচিত। এন্টিকোলিনার্জিক একই সাথে প্রয়োগকৃত অন্যান্য ওষুধের শোষণ ব্যাহত করতে পারে। ওষুধটির সাথে ডিগোক্সিন, হ্যালোপেরিডল, কর্টিকোস্টেরয়েড, কিটোকোনাজল, লিভোডোপা, অপিওয়েড এনালজেসিক, ফেনোথায়াজিন, ইউরিনারি এলকালাইজার ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য ওষুধের আন্তঃক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়।
প্রতিনির্দেশনা
প্রোপানথেলিন ব্রোমাইড নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশিত-
- প্রোপানথেলিন ব্রোমাইড অথবা এন্টিকোলিনার্জিক সমূহের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা
- গ্লুকোমা
- পরিপাকতন্ত্রের প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্ত রোগসমূহ (যেমন- পাইলোরোডিওডেনাল স্টেনোসিস, প্যারালাইটিক ইলিয়াস)
- মূত্রনালির প্রতিবন্ধকতা (প্রোস্টেটিক হাইপারট্রফি), বয়স্কদের অস্ত্রের এটোনি
- মাইয়েসথেনিয়া গ্রাভিস।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
প্রোপানথেলিন ব্রোমাইডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসমূহ মাত্রানির্ভর এবং চিকিৎসা বন্ধের সাথে অন্তর্হিত হয়। বিভিন্ন মাত্রায় মুখ ও ত্বকের শুষ্কতা এবং মাইড্রিয়াসিস লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া ইউরিনারি রিটেনশন, বমি বমি ভাব, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথাব্যথা, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, দ্বিধাভাব ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে
প্রোপানথেলিন ব্রোমাইড প্রেগন্যান্সি ক্যাটাগরি সি। গর্ভবর্তী প্রানীর উপর প্রোপানথেলিন ব্রোমাইড প্রয়োগ করা হয়নি। তবে এটি কেবলমাত্র সুনির্দিষ্টভাবে প্রয়োজন হলেই গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা উচিত। ওষুধ মাতৃদুগ্ধের সাথে নিঃসৃত হয় কিনা তার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। যেহেতু অনেক ওষুধ মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয় তাই স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তবে এন্টিকোলিনার্জিক ওষুধ সমূহ মাতৃদুগ্ধের নিঃসরণ কমাতে পারে।
সতর্কতা
বয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রোপানথেলিন ব্রোমাইড সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া অটোনমিক নিউরোপ্যাধি, লিভার ও কিডনী সমস্যা, হাইপারথাইরয়ডিজম, করোনারী হার্ট ডিজিস, কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিউর, কার্ডিয়াক ট্যাকি অ্যারিদমিয়া, হাইপারটেনশনে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত, কারণ এন্টিকোলিনার্জিকসমূহ এসকল অবস্থাকে গুরুতর করে থাকে।
মাত্রাধিক্যতা
মাত্রাধিক্যের লক্ষণসমূহ সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (বমি বমি ভাব, বমি) হতে শুরু করে। স্নায়ুতন্ত্রের অস্বাভাবিক কার্যকারিতা (অস্থিরতা থেকে পাগলামি), প্রবাহজনিত পরিবর্তন (ফ্লাসিং, নিম্ন রক্তচাপ, প্রবাহজনিত অক্ষমতা) শ্বাসতন্ত্রের অক্ষমতা, প্যারালাইসিস দেখা দিতে পারে।
থেরাপিউটিক ক্লাস
Anticholinergics (antimuscarinics)/ Anti-spasmodics
সংরক্ষণ
৩০°সে. এর উপরে সংরক্ষণ করা হতে বিরত থাকুন। আলো থেকে দূরে এবং শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।